সাবিবুর খান, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ
আজ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ৪০তম জন্মদিন। দেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে বহু মানুষ। আজকের দিনে তৎকালীন বিহারের(বর্তমানে ঝাড়খন্ডে) রাঁচিতে জন্মগ্রহণ করেন ধোনি। টিকিট কালেক্টর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের অধিনায়ক হওয়ার যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিলনা। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ধোনির সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মতো।
২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ধোনির। তবে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। তারপর ২০০৭ সালে অধিনায়কত্ব পেয়েই টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সংস্করণ জেতে মাহির ভারত। ২০১১ সালে তাঁর নেতৃত্বেই দেশের মাটিতে ২৮ বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালে ম্যাচের নায়কও নির্বাচিত হন ধোনি। ২০১৩ সালে ফের তাঁর নেতৃত্বেই আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘরে তোলে আমাদের দেশ। আর এরপরই নয়া নজির গড়েন ধোনি। বিশ্বের প্রথম অধিনায়ক হিসাবে আইসিসি-র তিন ট্রফি জেতেন তিনি।
টেস্ট ফর্মাটেও তাঁর অধিনায়কত্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২০০৯ সালে আইসিসি টেস্ট Ranking- এ নম্বর ওয়ান দল হিসেবে জায়গা পায় ভারত। দলনেতা ছিলেন ধোনিই। যদিও ২০১৪ সালে আচমকা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি।
টেস্ট ক্রিকেটে ৯০ ম্যাচে ৪৮৭৬ রান করেন ধোনি। ৬টি সেঞ্চুরি ও ৩৩টি হাফসেঞ্চুরি আছে ঝুলিতে। ওয়ানডেতেও ছিল নজরকাড়া সাফল্য। ৩৫০ ম্যাচে রান ১০৭৭৩। আছে ১০ টি সেঞ্চুরি ৭৩টি অর্ধশতরান। টি-২০ ক্রিকেটে ৯৮টি ম্যাচে ১৬১৭ রান করেন মাহি। হাফসেঞ্চুরি আছে ২টি।
২০১৭ সালে টি-২০ ও ওয়ানডে দলের দেশের অধিনায়কত্ব ছাড়লেও ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নীল জার্সিতে খেলেন মাহি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর কাশ্মীরে ভারতীয় আর্মিতে যোগদান করেন ধোনি।
আইপিএল ক্রিকেটেও অধিনায়ক হিসাব নজরকাড়া সাফল্য ধোনির। তাঁর নেতৃত্বেই ২০১০,২০১১ ও ২০১৮ সালে ট্রফি জেতে চেন্নাই সুপার কিংস।
দেশের হয়ে ধোনির ১৫ বছরের কেরিয়ার ছিল বর্ণময়। তিনি ছিলেন ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অধিনায়কও। সবরকম পরিস্থিতেই তাঁর ঠান্ডামস্তিষ্কের সিদ্ধান্তের জন্য তাঁকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামে ডাকা হয়। রিভিউ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর তুখোর নজরদারির জন্য বলা হয় ‘ধোনি রিভিউ সিস্টেম’। কিন্তু আদতে ডিআরএস-এর পুরো নাম ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম।
২০১৬ সালে ধোনির জীবনী নিয়ে বলিউডে বায়োপিক তৈরি করা হয়। ছবির নাম ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। ছবিতে ধোনির ভূমিকায় অভিনয় করেন সুশাং সিংহ রাজপুত। যদিও ২০২০ সালে মারা যান রিলের এই ধোনি। ছবিতে গার্লফ্রেন্ডের মৃত্যু থেকে সাক্ষীকে বউ হিসাবে পাওয়া—- জীবনের কঠিন সময়ও তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। যদিও ধোনির একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। নাম জিভা।
নীল জার্সিকে বিদায় জানালেও আইপিএলের মতো পেশাদারী ক্রেকেটে এখনও খেলে চলেছেন ধোনি। আশা করি, আরও বহুদিন খেলা চালিয়ে যাবেন।
Happy birthday Captain Cool