শিক্ষকদের দেরি ও মিড-ডে মিলে অনিয়মে উত্তাল মানিকচকের প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রধান শিক্ষকে শোকজ
মানিকচক চক্রের কাকরিবাধা বাণীস্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সময়মতো উপস্থিতি না থাকা এবং মিড-ডে মিলে কারচুপির অভিযোগে তোলপাড় তৈরি হয়েছে। বুধবার তদন্তে এসে বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ মিড-ডে মিলের হিসাবে গড়মিল ও উপস্থিতি জালিয়াতির প্রমাণ পেয়ে প্রধান শিক্ষক জীতেন মাঝি ও সহকারী শিক্ষিকা রুমকি বসাককে শোকজ করেছেন।
ওই দিন সকাল ১১টায় বিদ্যালয় খোলার নির্দিষ্ট সময় পার হলেও কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন না, যা নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় গেটে অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। স্থানীয় অভিভাবক প্রদীপ কর্মকার জানান, “প্রায়ই শিক্ষকরা দেরি করে আসেন, নিয়মের তোয়াক্কা করেন না।” এই অভিযোগের ভিত্তিতে পরিদর্শক পারভেজ তদন্তে এলে ধরা পড়ে মিড-ডে মিল সংক্রান্ত অনিয়ম।
বিদ্যালয়ে ওই দিন মাত্র ৫৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও মিড-ডে মিলের রেকর্ডে ১৪৫ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এছাড়া, ডিম-ভাতের বদলে নিরামিষ খাবার পরিবেশন করা হয় শিশুদের। পরিদর্শক পারভেজ এ প্রসঙ্গে বলেন, “উপস্থিতি ও খাবারের হিসাবে গড়মিল স্পষ্ট। ছুটির অনুমতি ছাড়াই প্রধান শিক্ষক ও সহকারী অনুপস্থিত ছিলেন। তাদের শোকজ করা হয়েছে এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রধান শিক্ষক জীতেন মাঝি দাবি করেন, তিনি ছুটিতে ছিলেন এবং ঘটনা সম্পর্কে অজ্ঞাত। অন্যদিকে, সহকারী শিক্ষক সুপ্রকাশ মণ্ডল দেরির কারণ হিসেবে প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে চাবি আনতে যাবার কথা উল্লেখ করেন। তবে স্থানীয়রা জানান, নিয়মিতভাবে বিদ্যালয় দেরি করে চালু করা হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তদন্ত জোরদার করেছে। মিড-ডে মিল তহবিলের অপব্যবহার ও উপস্থিতি জালিয়াতির অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের শৃঙ্খলাহীনতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের ক্ষোভ বাড়ছে বলে জানা গেছে।