
ফিলিস্তিনে এখনকার নেতৃত্ব নিয়ে অনেক মতভেদ থাকার সত্ত্বেও কিন্তু একটা বিষয়ে প্রায় সবাই একমত: ফিলিস্তিনের দুর্বল নেতৃত্ব। মাহমুদ আব্বাস, যিনি এখন ৮৯ বছর বয়সী, তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এখনও তিনি প্রেসিডেন্ট পদে আছেন। তার প্রশাসন অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তার সুরক্ষা বাহিনী মূলত ইসরায়েলের নির্দেশ মেনে চলে। প্রায় ৯০% ফিলিস্তিনি চান, আব্বাস যেন পদত্যাগ করেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল, তার জায়গায় নতুন নেতা কে হবেন?
এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনে একজন নেতা আছেন, যিনি কারাগারে বন্দী—মারওয়ান বারঘৌতি। ফিলিস্তিনের তিনি একজন প্রকৃত নায়ক এবং নেতৃত্বের নাম। তাকে ফিলিস্তিনের “প্যালেস্টাইন ম্যান্ডেলা” বলা হয় কারণ তাকে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদার জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করতে দেখা গেছে। দ্য ইকোনমিস্ট তাকে “বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দি” বলে অভিহিত করেছে, আর দ্য গার্ডিয়ান তাকে “বেঁচে থাকা সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি নেতা” হিসেবে উল্লেখ করেছে। তিনি ফাতাহ পার্টির একটি শাখা “তানজিম”-এর সাবেক নেতা এবং ২০০২ সালে তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন এবং তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। ইসরায়েল বারবার তাকে হত্যা করতে চেয়েছে, কিন্তু সে যুদ্ধে বারঘৌতি কখনো হার মানেননি এবং তার লড়াই থেমে যায়নি।
তবে, তার বিচার নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। ইসরায়েল তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে, প্রমাণের অভাব সত্ত্বেও তাকে পাঁচটি হত্যার দায়ে দণ্ডিত করা হয়। তার মনোবল এবং সংগ্রাম ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এক ধরনের আশা ও প্রেরণা জাগায়।
এখনও মারওয়ান বারঘৌতি ইসরায়েলে বন্দী আছেন, এবং তার মুক্তির সম্ভাবনা খুব কম। ৭ অক্টোবরের পর থেকে তিনি একা কারাবন্দি আছেন, এবং বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন। ফিলিস্তিনিরা এখনো তার মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছেন, কিন্তু ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয় সরকারের পক্ষ থেকেও তার মুক্তির বিরোধিতা করা হচ্ছে। এককভাবে জেলে বসে থাকলেও তার প্রভাব এবং নেতৃত্ব আজও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গভীরভাবে অনুভূত হয়।
মারওয়ান বারঘৌতি যিনি তার দেশের স্বাধীনতা এবং মর্যাদার জন্য জীবন কাটাচ্ছেন। তার সংগ্রাম শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এটি একটি আত্মত্যাগের গল্প, যেখানে তিনি নিজের দেশের জন্য নিজেদের শান্তি ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে লড়াই করছেন, যেখান থেকে তার নাম একদিন ইতিহাসে চিরকাল জীবিত থাকবে।