
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও অঞ্চলে জঙ্গি হামলার পর থেকেই এলাকাটি নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা, সিএপিএফ এবং স্থানীয় পুলিশের যৌথ বাহিনী। গত পাঁচ দিনে কমপক্ষে চারবার জঙ্গিদের হদিশ (ট্র্যাক) পেয়েও বার বার ধরতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীরা। ঘন অরণ্য, পাহাড়ি টেরেন এবং সন্ত্রাসীদের ধূর্ততার কারণে অভিযান জটিল হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।
সেনা সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁও তহসিলের হাপাত নার গ্রামসংলগ্ন বনাঞ্চলে প্রথমবার জঙ্গিদের মুখোমুখি হয় সেনা। কিন্তু গা-ঢাকা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত ঘন জঙ্গলের সুযোগ নিয়ে তারা পলায়ন করে। এরপর কুলগামের জঙ্গলে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ হয়, যেখানে গুলিবিনিময় হলেও শেষরক্ষা হয়নি। তৃতীয় ও চতুর্থবার ট্রাল পর্বতশ্রেণী ও কোকেরনাগের জঙ্গলে তাদের দেখা গেলেও দ্রুত গায়েব হয়ে যায় সন্ত্রাসবাদীরা।

এক সেনা অফিসার সংবাদ মাধ্যমে বলেন “এটা একপ্রকার ইঁদুর-বিড়ালের খেলা। আমরা বারবার তাদের কাছাকাছি পৌঁছাচ্ছি, কিন্তু ধরা পড়ার আগেই তারা অদৃশ্য হচ্ছে। ঘন জঙ্গল এখানে প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে ধৈর্য ধরে অপারেশন চালালেই তারা আমাদের হাতেই ধরা পড়বেই।”
নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য ও গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে চলমান “চিরুনি তল্লাশি” জোরদার করেছে। বুধবার পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, জঙ্গিরা কোকেরনাগের পার্বত্য অঞ্চলেই লুকিয়ে রয়েছে। এলাকাজুড়ে নিশ্ছিদ্র নজরদারি ও ব্লকেড চলমান থাকলেও স্থানীয়দের সহযোগিতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়েছে।

পহেলগাঁওয়ের ভূগোল সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বড় বাধা। উঁচু-নিচু পাহাড়, গভীর গিরিখাত ও অগম্য ঘন জঙ্গল সন্ত্রাসীদের জন্য প্রাকৃতিক ঢাল। তবে আমাদের সেনারা আশাবাদী, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই অভিযানের ইতিবাচক ফল মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হয়েছে চেকপোস্ট ও ড্রোন নজরদারি। চলতি মাসে এই প্রথম নয়, গত এক বছরে কাশ্মীর উপত্যকায় ৩০টিরও বেশি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হয়েছে, যার ৮০% সফল বলে দাবি কেন্দ্রের।