রাজ্য বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ৪ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা

এনবিটিভি ডেস্ক: গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবছরের রাজ্য বাজেটে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে এক হাজার কোটির টাকারও বেশি বরাদ্দ করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার বিধানসভায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যে বাজেট ভাষণ পেশ করেন তাতে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের জন্য ৪,৭৭৭.৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। গত বছর ২০২০-২১ বাজেট বক্তৃতায় অমিত মিত্র রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে ৩,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ফলে আগামী অর্থবর্ষে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে এক হাজার ১৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি হল।
এবারের বাজেটে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন, পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য হজ কমিটি, আন এডেড মাদ্রাসা প্রভৃতি খাতে বরাদ্দ গতবারের তুলনায় বেড়েছে।

 

২০২১-২২ বর্ষে যে ৪,৭৭৭২ কোটি ৮১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তার মধ্যে প্রশাসনিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৮,৮৯ কোটি ৮১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্পে ৩,৩১৬ কোটি টাকা। আর কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু প্রকল্পে রাজ্যের অংশিদারিত্ব ৫৭২ কোটি টাকা। এই ৪,৭৭৭ কোটি বরাদ্দ টাকার মধ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্পে যে ৩,৩১৬ কোটি টাকার বরাত মিলেছে তার মধ্যে মাদ্রাসা সংলগ্ন হস্টেলে থাকা খরচ বাবদ ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

 

মেধাবী সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য এবার রাজ্য সরকার এক উল্লেখজনক টাকা বরাদ্দ করেছে। ট্যালেন্ট সাপোর্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৮০১ কোটি টাকা। এবারের বাজেটেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা মাদ্রাসা, কবরস্থানের প্রাচীর, হজ হাউস নির্মাণ, সংখ্যালঘু ভবন তৈরি, বেকার, কারাইমাইকেল হস্টেল প্রভৃতি খাতে বেশ ভাল রকম বরাদ্দ করা হয়েছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ বারের বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। গত বছরের বাজেটে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ১০০ কোটি টাকা। তা বেড়ে এবারে হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। তালতলায় কলকাতা মাদ্রাসার উন্নয়নে গতবারের আড়াই লক্ষ থেকে এবার ১০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।

 

আন এডেড মাদ্রাসা (নন-গভর্নমেন্ট সেকেন্ডারি স্কুল)-এর কম্পিউটার শিক্ষা সহায়তায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য যেসব খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, উর্দু প্রমোশনে ১৫ কোটি টাকা, পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের পরিকাঠামো উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা, কারমাইকেল ও বেকার হস্টেলের সংস্কার ও সম্প্রসারণে ৫০ লক্ষ টাকা, সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের বাইসাইকেলের জন্য ১৫০ কোটি টাকা, মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্র বা এমএসকের জন্য পঞ্চায়েতকে সাহায্য ১০০ কোটি টাকা, কবরস্থান, ঈদগাহ, মাজারের প্রাচীরের জন্য ২০০ কোটি টাকা, দ্বিতীয় হজ হাউস নির্মাণ সহায়তায় ২০ কোটি টাকা, জেলায় সংখ্যালঘু হস্টেল নির্মাণের জন্য ৩০ কোটি টাকা, ওয়াকফ সম্পত্তি উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা, মাদ্রাসায় সায়েন্স ল্যাবরেটরির জন্য ১০ কোটি, মাদ্রাসার অতিরিক্ত কক্ষের জন্য ১০ কোটি টাকা, সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও কল্যাণ প্রকল্পে ৫৫০ কোটি টাকা প্রভৃতি।

 

এছাড়া, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু প্রকল্পে রাজ্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করবে তার মধ্যে এমএসডিপি (অধুনা প্রধানমন্ত্রী জনবিকাশ কার্যক্রম) খাতে ৬৫ কোটি সহ ৫৭২ কোটি টাকা।

Latest articles

Related articles