সাইফুল্লা লস্কর : ইউ পি এ জামানায় লোকপাল বিল এর সমর্থনে আন্দোলনে খুব সক্রিয় ছিলেন সমাজকর্মী আন্না হাজারে। তবে মোদি সরকার আসার পর থেকে তেমন একটা সক্রিয় হতে দেখা যায়নি তাকে। অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি মোদির প্রতি হয়ত কিছুটা নরম। তবে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে আন্না হাজারে এবার কৃষকদের দাবি না মানা হলে জীবনের শেষ এবং চরম অনশনের হুমকি দিলেন মোদি সরকার কে। তিনি গতকাল মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলায় তার রালেগাঁও সিদ্ধি গ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “আমি গত তিন বছর যাবত কৃষকদের সমর্থনে আন্দোলন করছি। এই সরকার শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কৃষকদের জন্য কিছুই করেনি। এই সরকারের ওপর আমার আর কোনো আস্থা নেই। দেখা যাক তারা এবারে কোন পদক্ষেপ নেয়। সরকার আমার কাছে সময় চেয়েছিল, আমি জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছি। তার মধ্যে আমার দাবিগুলো মেনে নেওয়া নেওয়া হলে আমি জীবনের শেষ অনশনে বসব।”
এক মাসের বেশি সময় ধরে দিল্লি হরিয়ানার মধ্যবর্তী সিংঘু সীমান্তে ১০ লক্ষাধিক কৃষক প্রবল শৈত্য প্রবাহ এবং প্রতিকূল পরিবেশকে কে উপেক্ষা করে আন্দোলনরত অবস্থায় রয়েছে জনবিরোধী কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে। তারা কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে সারাদেশের মানুষকে যোগদান করতে বলে একদিন ভারত বনধের ঘোষণা দেয় ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। সেই বনধকে সমর্থন করে ৮ ই ডিসেম্বর একদিন অনশনে বসেন আন্না হাজারে। তারপর থেকে আন্না হাজারেকে কৃষি বিল এর সমর্থনে নেওয়ার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে মোদি সরকার। তাকে কৃষি বিলের উপযোগিতা এবং উপকারিতা বোঝানোর জন্য বিজেপির তরফ থেকে পাঠানো হয়েছিল প্রাক্তন বিজেপি নেতা এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ হরিভাউ ভাগাড়ে কে। তাতেও যে কোন কাজ হয়নি তা বোঝা গেল অন্নার গতকালের মন্তব্যে। যে আন্নার আন্দোলন কংগ্রেসের পতনের পিছনে অন্যতম কারণ ছিল তার এমন হুশিয়ারির পর মোদি সরকার কোনো পথে হাঁটে সেটাই এখন দেখার।