নিউজ ডেস্ক : করোনা সংক্রমনের প্রথম দফায় দেখা গিয়েছিল মৃতদের বেশিরভাগের বয়স ৫০ এর বেশি। অধিকাংশ ৬৫ ঊর্ধ্ব ছিল। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত ২ মাসে কর্নাটকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ২০-৪৯ বয়সিদের সংখ্যা বেশি। তাই কম বয়সীরা ও আদৌ নিরাপদ নয় করোনা ভাইরাসের এই নয়া স্ট্রেনের বিরুদ্ধে। এই পরিসংখ্যান বলে দচ্ছে, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ তরুণ প্রজন্মের উপর কতটা নির্মম প্রভাব ফেলছে। চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে খুব কম সংখ্যায় অল্প বয়সিরা সংক্রমণে ভুগেছেন বা তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। আর এখন অল্প বয়সিরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। তাঁদের আইসিইউ বেডেরও প্রয়োজনও হচ্ছে বেশি। আর তা মোট আইসিইউ বেডের ৩০ শতাংশের কম নয়।
জয়নগরের সাগর হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর মহেন্দ্র কুমার বলেন, বেশিরভাগ তরুণ আক্রান্ত সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিলেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছেন। ১৭ মার্চ থেকে ১৭ মে-র মধ্যে ২০-৪৯ বয়সি ৪ হাজার ৪৩২ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গিয়েছেন ২ হাজার ৪৬৫ জন। আইসিইউ-তে কোভিডের চিকিৎসা করা ইনটেনসিভিস্টরা বলছেন, এই তরুণদের বেশিরভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পরিবারের একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২০-৪৯ বছর বয়সি ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, ৩০-৩৯ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫ লক্ষ ১০ হাজার। আর ৪০-৪৯ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। কোভিডের প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা কমিটির এক সদস্য বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ১৮-৪৪ বয়সিদের টিকা দেওয়ার ধীর গতি বড় উদ্বেগের বিষয়। আর এই ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর অন্যতম কারণ, প্রাথমিক টিকাকরণ অভিযানের অংশ ছিলেন না ১৮-৪৪ বছর বয়সিরা। এছাড়াও সাবধানতা অবলম্বন না করা, সামাজিক দূরত্ববিধি না মানা, মাস্ক না পরাও গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে করোনা ভাইরাসের এই দ্বিতীয় ঢেউ এর তীব্রতা অনেকটাই হ্রাস পাবে জুলাই মাসের দিকে। আবার তার কয়েক মাস পর আসতে পরে তৃতীয় ঢেউ। সম্ভাব্য সময়সীমা ৬ মাস বলা হচ্ছে। এই তৃতীয় দফার সংক্রমণের তরুণদের সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে শিশুদের ও। ফলে টিকাকরণ কর্মসূচির গতি এখন বৃদ্ধি করার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন চিকিৎসা মহল।