
উত্তরপ্রদেশের উননাও জেলায় হোলি উৎসবের সময় এক মধ্যবয়সী রোযাদার মুসলিম ব্যক্তি উনার গায়ে রং মাখানো নিয়ে আপত্তি করায় তাঁকে নির্মমভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। শনিবার সকালে রোজা রেখে অটো রিকশা চালানোর সময় স্থানীয় এক মন্দিরের কাছে কোটওয়ালি সদর থানার এলাকায় হোলি উদযাপনকারীদের দ্বারা তিনি আটকানো হন। ঘটনাটি সংঘটিত হয় সকাল ১১টার দিকে।
৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ শরীফের ওপর হামলাকারীরা জোর করে রং লাগানোর চেষ্টা করে। প্রতিরোধ করায় তারা তাকে মারধর শুরু করে। শরীফ প্রাণ নিয়ে সেখান থেকে পালালেও পরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তাঁর মেয়ে বুশরা জানান, আক্রমণকারীরা শরীফের সাথে অসভ্য আচরণ করার পাশাপাশি তাঁর ওয়ালেট থেকে ৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়। তিনি বলেন, “বাবা কাউকে শত্রুতা করেননি। তিনি কয়েক বছর সৌদি আরবে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে মাত্র দুই মাস আগে দেশে ফিরেছিলেন।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শরীফের ভাতিজা মোহাম্মদ শামিম বলেন, “আমি যখন ডেইরি যাচ্ছিলাম, তখন চাচাকে আক্রান্ত হতে দেখি। হামলাকারীরা জেদ ধরে রং লাগাচ্ছিল। চাচা বাধা দিলে তারা তাকে আবার ধরে ফেলে। আমার চোখের সামনেই তাকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে তারা।”
শরীফের মৃত্যুতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পরিবারের দাবি, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত শেষকৃত্য করা হবে না। বিক্ষোভে ফেটে পড়া স্থানীয়রা কানপুর-লক্ষ্মৌ প্রধান সড়কে শরীফের লাশ রেখে রাস্তা অবরোধ করে। কিছু যানবাহন ভাঙচুরেরও খবর পাওয়া যায়।
পুলিশের বক্তব্য, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে হৃদরোগে মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং শারীরিক আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে স্থানীয়রা একে খুন বলে দাবি করছে। অপরদিকে, অভিযুক্তদের পরিবারের দাবি, “কয়েকটি শিশু হোলি খেলছিল। শরীফ তাদের রং না লাগাতে বলে নিজের অটোর কাছে যান। এরপর কী ঘটেছে, তা আমরা জানি না।”
পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার না করলেও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে। শরীফের পরিবার ন্যায়বিচারের দাবিতে অনড় রয়েছে।