নিজের শিশু সন্তানকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, তুলে আছাড় মারার অভিযোগ, আটক বাবা-মা

ক্যানিং: সমগ্র রাজ্যজুড়ে যখন প্রচার ও সচেতনতা চলছে নারীপাচার,শিশুশ্রম এবং শিশুর উপর অত্যাচার বন্ধ করার জন্য। তখন এক বছর তিনেকের শিশুর দেহে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে শিশুটির উপর জঘন্য অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ উঠলো খোদ শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে। আবার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ উটল প্রায় সব সময় তুলে আছাড় মারার। এমনই ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত তালদির চাঁদখালি এলাকায়।

 

ঘটনার খবর পেয়ে মহিলা সমিতির তরফে পুলিশে অভিযোগ। এরপর অভিযুক্ত শিশুর মা ও বাবাকে আটক করেছে ক্যানিং থানা পুলিশ। আর এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুর থানার অন্তর্গত রাসমাঠ এলাকার অর্পিতার সাথে বছর ছয়-সাতেক আগে তালদির চাঁদখালির দেবাশীষ আচার্য্যের বিয়ে হয়।দম্পতির বছর তিনেক বয়সের এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান রয়েছে। ভাত নষ্ট করে ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে অর্পিতার শ্বশুর হরিহর আচার্য্যের সাথে একপ্রস্থ ঝগড়া হয় অর্পিতার। অভিযোগ, সেই ঝগড়ার সুত্র ধরে ঘরের দরজা বন্ধ করে গ্যাস ওভেনে খুন্তি গরম করে নিজের সন্তানের দেহে একের পর এক ছ্যাঁকা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় শিশুটি চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে। তার চিৎকারে বাড়ির অন্যান্যরা দৌড়ে আসে। উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও ঘরের দরজা বন্ধ থাকার জন্য নিরুপায় হয়ে পড়েন। এরপর শিশুর পরিবারের অন্য সদস্যরা স্থানীয় এক মহিলা সমিতির মহিলাদেরকে ঘটনার কথা জানিয়ে দ্রুততার সাথে আসার জন্য অনুরোধ করেন। ঘটনাস্থলে হাজীর হয় মহিলা সমিতির একাধিক সদস্যা। তারা শিশুটি কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ শিশুর বাবা ও অভিযুক্ত মা -কে আটক করে। পাশাপাশি শিশুটির উপর প্রায় সময় কেন এমন নির্মম অত্যাচার করা হয়  সে বিষয়ে জানার জন্য জিঞ্জাসাবাদ শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।

অন্যদিকে, অর্পিতার শ্বশুর হরিহর আচার্য্য ও শাশুড়ি অনিন্দিতা আচার্য্যের অভিযোগ প্রতিনিয়ত অশান্তির সৃষ্টি করে নিজের ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলে আমাদের কে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এমন কি নিজেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমাদের পরিবার কে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ, ছোট্ট নিঃষ্পাপ শিশু ও আমরা যাতে এমন অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পাই সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের বাঁচাক।

অন্যদিকে,  নিজের শিশু সন্তানের উপর পৈশাচিক অত্যাচারের সত্যতা স্বীকার করে অর্পিতা আচার্য্য জানিয়েছে “আমার স্বামী,ভাসুর ও শ্বশুর আমার এবং আমার সন্তানের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার করে।রাগে পড়ে আমি আমার সন্তানের সাথে এরকম করে ফেলি। তাই গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছি।”

নিজের সন্তানের প্রতি গর্ভধারিণী মায়ের এমন পৈশাচিক অত্যাচারের কথা প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবেশীরা অভিযুক্ত মায়ের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Latest articles

Related articles