
রায়গঞ্জ, ৩ মার্চ: সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক কলেজ অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রায়গঞ্জ জেলা আদালত সংলগ্ন এলাকা থেকে ইটাহার থানার পুলিশ অভিযুক্ত জোসেফ সোরেনকে আটক করে। জোসেফ হুগলির খানাকুলের রাজা রামমোহন রায় কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক এবং তাঁর স্থায়ী বাসস্থান দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার দানগ্রামে।
জানা যায়, জোসেফ পূর্বে দক্ষিণ দিনাজপুরের কচরা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ২০২০ সালে তিনি স্কুলের চাকরি ছেড়ে হুগলির কলেজে অধ্যাপক পদে যোগ দেন। অভিযোগ, হুগলিতে যোগদানের পর তিনি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে প্রতারণার জাল বিস্তার করেন। প্রাথমিক শিক্ষক পদসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নামে ইটাহার, রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নেন। সর্বমোট প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
কয়েক মাস আগে ইটাহার ও রায়গঞ্জ থানায় জোসেফের বিরুদ্ধে একাধিক চাকরিপ্রার্থী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হলেও পুলিশ এতদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সোমবার অন্য একটি মামলায় রায়গঞ্জ জেলা আদালতে হাজিরা দিতে এলে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
ইটাহারের পোরষা এলাকার বাসিন্দা আরজাউল হক জানান, “আমার স্ত্রীকে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার পদে এবং শ্যালককে গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোসেফ সোরেন আমাদের কাছ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান।” আরজাউলসহ আরও চারজন প্রতারিত চাকরিপ্রার্থী ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। টাকা ফেরত চাওয়ায় জোসেফ তাঁদের নামে প্রায় ৭৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার চেক ইস্যু করেন, যা পরবর্তীতে বাউন্স করে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তাঁরা রায়গঞ্জ জেলা আদালতে মামলা দায়ের করেন।
রায়গঞ্জ জেলা আদালতে আরজাউলের পক্ষের আইনজীবী মনতোষ সরকার বলেন, “ওই অধ্যাপক চেকের মাধ্যমে টাকা ফেরত দেবেন বলে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যে চেক দেন, সেগুলো প্রত্যেকটি বাউন্স করে। আজ অভিযুক্ত রায়গঞ্জ জেলা আদালতে হাজিরা দিয়ে বাইরে বের হতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।”
বর্তমানে পুলিশ ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এবং প্রতারিতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।