
দক্ষিণ কাশ্মীরের চারটি জেলা—পুলওয়ামা, শোপিয়ান, কুলগাম এবং অনন্তনাগে গত দুই দিনে কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে সাতটি বাড়ি ভেঙে ফেলা ফেলেছে। এই ধ্বংসকার্য গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এবং শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পাহেলগাও-এ সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বাড়িগুলি লস্কর-ই-তইবা সংগঠনের সদস্যদের, যাদের মধ্যে কেউ কেউ ওই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ধ্বংস করা বাড়ির মালিকদের মধ্যে রয়েছেন পুলওয়ামা জেলার আহসান উল হক শেখ ও হারিস আহমদ,কুলগাম জেলার জাকির আহমদ গানি ও জাহিদ আহমদ,শোপিয়ান জেলার শাহিদ আহমদ কুতাই,ত্রালের আসিফ আহমদ শেখ,এবং অনন্তনাগের বিজবেহারার আদিল থোকার। অথচ এই ঘটনা নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসন, সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশের তরফে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র কিছু কর্মকর্তা অনানুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ধ্বংসকার্যটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক অবস্থানের পরিপন্থী। আদালত জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বাড়ি ভাঙার আগে মালিকদের শো-কজ নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক। সুপ্রিম কোর্ট আরও স্পষ্ট করেছে যে আবাসনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার এবং এটি সংবিধানের মূল কাঠামোর অংশ। ত্রালের আসিফ আহমদ শেখের বোন ইয়াসমিনা এই ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি যখন বাড়িতে পৌঁছাই, ততক্ষণে পুলিশ আমার মা ও বোনদের নিয়ে গিয়েছিল। রাতের বেলা একজন ক্যামোফ্লেজ পরা লোককে দেখেছি, যে হয়তো বোমা পেতে এসেছিল।

পাহাড়গঞ্জের হামলা সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানা নেই। এই বাড়িটি আমাদের দাদা তৈরি করেছিলেন। আমাদের মাত্র দুটি ঘরের অংশ ছিল, কিন্তু তারা পুরো বাড়িটাই ধ্বংস করে দিয়েছে।”ইয়াসমিনা প্রশ্ন তুলে বলেন, “যদি আমার ভাই সত্যিই পাহাড়গঞ্জের হামলায় জড়িত থাকে, তাহলে আমাদের পরিবারের দোষ কী? আমার বাবা-মাকে কেন এভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?”এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই পদক্ষেপকে অন্যায় এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।