এনবিটিভি ডেস্কঃ হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি হরিয়ানার গুরুগ্রামে সরকারের মনোনীত স্থানে নামাজ ব্যাহত করার প্রবল প্রচেষ্টা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি একটি গুরুদুয়ারা কমিটি মুসলমানদের শুক্রবার নামাজের জন্য শিখ ধর্মের মানুষ জায়গা দিয়ে সম্প্রীতির নজির তৈরি করে।
উল্লেখ্য, হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর সমর্থক ও সদস্যরা গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতি শুক্রবার গুরুগ্রাম এলাকা জুড়ে নামাজের জায়গায় প্রতিবাদ করে আসছে। নামাজের সময় ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান, কখনও নামাজের স্থানে গোবর ছিটিয়ে নামাজ আদায়ে বাধা প্রদান করে আসছে বলে অভিযোগ। যদিও মুসলমানরা ৩৭টি স্থানে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নামাজ পড়ে আসছে। পুলিশ নামাজ চলাকালীন নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করলে, হিন্দুত্ববাদীরা তা মানতে নারাজ। অক্টোবরের শেষের দিকে প্রায় ৩০ জন হিন্দুত্ববাদী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উল্লেখ, গুরুগ্রাম প্রশাসন এই সাইটগুলি প্রথমে ২০১৮ সালে মনোনীত করে নামাজের জন্য অনুমতি দেয়, তার পর থেকে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি এই স্থানগুলোতে নামাজ পড়তে দেবে না এই প্রচারণা চালানো শুরু করে। সম্প্রতি প্রশাসন ৩৭টি মনোনীত সাইটের মধ্যে আটটিতে নামাজ পড়ার অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ।
‘যুক্ত হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন দ্বারা একটি গোবর্ধন পূজার আয়োজন করা হয় একটি নামাজের স্থানে। দিনটি ছিল গত ৫ নভেম্বর শুক্রবার। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। যিনি ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি দিয়েছিলেন।
গুরুগ্রামের সবজি মান্ডিতে গুরুদ্বার শ্রী গুরু সিং সভার প্রধান শেরদিল সিং সিধু বলেন যে, সদর বাজার, সেক্টর ৩৯,সেক্টর ৪৬, মডেল টাউন এবং জ্যাকবপুরার পাঁচটি গুরুদুয়ারাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নামাজের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
শেরদিল সিং সিধু আরও বলেন, “গুরুদুয়ারা হল গুরুর ঘর। সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে এখানে এসে প্রার্থনা করতে আমরা স্বাগত জানায়। যদি মুসলিম সম্প্রদায় নির্দিষ্ট স্থানে প্রার্থনা করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়, তবে তারা গুরুদুয়ারা গুলিতে প্রার্থনা করতে পারে।”
জমিয়ত উলামার সদস্যরা গুরুদুয়ারা কমিটির সাথে দেখা করেন এবং প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন, যাকে তারা “সদয়” বলে মন্তব্য করেন। শুক্রবার ৩৯ নম্বর সেক্টর ও সদর বাজারের গুরুদুয়ারায় নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
জমিয়তের প্রধান মুফতি মোহাম্মদ সেলিম এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এটি একটি খুব ভালো পদক্ষেপ এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে অনেক দূর নিয়ে যাবে।”