খুন না আত্মহত্যা এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তুমুল জল্পনা-কল্পনা। ট্যাংরার একই বাড়ি থেকে তিনজন মহিলার মৃতদেহ পাওয়া মাত্রই পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। বর্তমানে পরিবারের বাকি সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চিকিৎসাধীন এক সদস্য জানান, পরিবারে পুরুষ সদস্যের সামনেই মৃত্যু ঘটে তিন মহিলা সদস্যের। প্রথমেই পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যের মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বেরোতে শুরু করে। এ দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে ওঠে পরিবারের বাকি মহিলা সদস্যরা। এরপর বাকি দুই মহিলা সদস্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
পুলিশ সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বাড়ির মহিলা সদস্যদের রক্তাক্ত দেহ তিন তলার মেঝেতে পড়েছিল। পরিবারে পুরুষ সদস্যরা গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্যের ঘনঘটা। সাম্প্রতিক কালে সম্ভ্রান্ত এই পরিবারে দেখা দিয়েছে আর্থিক সমস্যা। প্রসূন দে ও প্রণয় দে চামড়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের

তৈরি চামড়ার পণ্য বিদেশে রপ্তানি হতো। বর্তমানে ব্যবসায় মন্দা দেখা যায়। চেক বাউন্সের অভিযোগ সামনে আসতে থাকে।
পৌরসভা সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ২০২৩-২৪ সালে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করায় দে পরিবার। তাদের চামড়ার ব্যবসায় মোট দুটি ট্রেড লাইসেন্স ছিল। ২৩-২৪ সালের পর আর ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের দুই মালিক, প্রসূন দে ও প্রণয় দে আর্থিক অভাবে ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে পৌরসভাকে। যার ফলে চামড়ার ব্যবসা পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত উপক্রম হয়। তারা পৌরসভাকে এও জানিয়েছেন, আর্থিক সংকট এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই তাদের। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন বিদেশি রপ্তানিকারকরা তাদের সঙ্গে আর কাজ করতে চাইছে না। ৯ জন রপ্তানিকারকদের মধ্যে ৬ জন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের থেকে। ব্যবসা চালানোর জন্য তৈরি করা হয় দুটি সংস্থা। এখন দুটি সংস্থাই আর্থিক অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। তদন্তকারীরা মনে করছে এই মৃত্যুর পেছনে দে পরিবারের আর্থিক অভাব একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।
বর্তমানে দে পরিবারের সদস্য প্রণয় ও প্রসূন দুজনেই হাসপাতালে ভর্তি, চলছে চিকিৎসা। চিকিৎসাধীন ২ সদস্যের থেকে জবানবন্দি সংগ্রহ করেছে পুলিশ।