
টিএমসি-র জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কমিটির অন্য সকল 35 জন সদস্য তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিলেন। অভিষেক ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে একটি স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ তদারকিতে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি।
বৈঠকটি আহ্বান করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, যিনি দলের প্রবীণ গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে বিবেচিত। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয় প্রকাশ মজুমদার এবং লোকসভায় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিটির সদস্য।
রাজ্যের মোট ৮১,০০০-এরও বেশি বুথে ভোটার তালিকা থেকে “ভুয়ো” ভোটারদের বাদ দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্যে। স্থানীয় পর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাথমিক ফলাফল পরীক্ষা করার জন্যই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বৈঠকে কমিটি দলকে নির্দেশ দিয়েছে যে বাংলার ভোটার তালিকায় যেসব নাম বৈধভাবে যোগ্য নয়, তাদের তালিকা তৈরি করতে, একই EPIC নম্বর সহ দুই বা ততোধিক ভোটার আইডির প্রতিটি ক্ষেত্রে নথিভুক্ত করতে, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি অংশে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালিকার প্রতিটি নাম মেলাতে — যাদের রাজ্যে ভোটার হওয়ার বৈধ যোগ্যতা আছে কিন্তু তালিকায় তাদের নাম নেই তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে — এবং অনলাইন প্রক্রিয়ায় যোগ করা সমস্ত নাম পুনরায় যাচাই করতে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি কি তৃণমূল দলে নতুন সমীকরণের সৃষ্টি করছে? যদিও বিরোধীরা চিরকাল ব্যঙ্গ করে এসেছে যে, ‘তৃণমূলের একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট’। তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে অস্বীকার করলেও, তৃণমূলের অন্তরে মমতা অনুগামী এবং অভিষেক অনুগামীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন বারবার লক্ষ্য করা গেছে।
ইতিমধ্যে, প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রত্যক্ষভাবে নাম জড়িয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলেরই সর্বার্থ ভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিনা, তা নিয়ে কোন স্পষ্ট মন্তব্য করেনি সিবিআই।
এখন প্রশ্ন উঠছে, ‘সততার প্রতীক’ এই ভাবধারা বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে বজায় রাখার জন্য কি সাময়িক ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে তৃণমূল? এমন ঘটনা কিন্তু এর আগে বঙ্গীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের অন্দরে বারবার দেখা গেছে। যেকোনো দুর্নীতি বা অসামাজিক কার্যকলাপে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নাম জড়ালে, সাময়িকভাবে সেই নির্দিষ্ট নেতা বা কর্মী বিমুখ হয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার।