উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে বামনহাট স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনা
গত বছর উত্তরবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কেউই ভুলে যায়নি, এবার কোচবিহারে নতুন করে ট্রেন দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আজ সকাল ১০টার নাগাদ বামনহাট স্টেশনে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ইঞ্জিন ঘোরানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন, ইঞ্জিনটি দাঁড়িয়ে থাকা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। এই আঘাতের কারণে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের শেষ বগিটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। ফলে, বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন।
এখনো পর্যন্ত দুর্ঘটনায় হতাহতের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটির দিকটি আবারও আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ধরনের প্রযুক্তিগত ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটির জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য একটা বড় বিপদের সংকেত।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে এবং দ্রুত কার্যকর সমাধান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি তুলেছে। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার সাথে সাথে, ঘটনাস্থলে যাত্রীদের সুবিধার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে রেল মন্ত্রীর ফলাও করে প্রচার করা কবজ প্রযুক্তি রেল দূর্ঘটনা এড়াতে প্রকৃতপক্ষে কি কার্যকর?
ভারতীয় রেলওয়ে দফতর ‘কবজ প্রযুক্তি’ প্রবর্তনের ঘোষণা করেছিল, যা রেল পরিবহনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে – এই প্রযুক্তির বাস্তব কার্যকারিতা কী, এবং রেলগাড়িতে প্রকৃতপক্ষে কি এর প্রয়োগ হচ্ছে কিনা?
প্রধান সমালোচকরা অভিযোগ করছেন, প্রযুক্তিগত বিবরণ ও ফলাফলের ক্ষেত্রে প্রমাণ অপ্রতুল। ঘোষণার আলোচনায় প্রযুক্তির সুবিধা ও সম্ভাব্য ফলাফল তুলে ধরা হলেও, মাঠের বাস্তব চিত্র সেই দাবিকে সমর্থন করছে না। রেলপথে, যাত্রী নিরাপত্তা ও সময়মত সেবার ক্ষেত্রে কোনো সুস্পষ্ট উন্নতির লক্ষণ দেখায়নি। কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করেন, “কবজ প্রযুক্তি” কেবলমাত্র মুখস্থ ঘোষণার স্তরে থেকে গেছে – বাস্তবে, রেল পরিবহনের নানা জটিল সমস্যার সমাধান আনতে ব্যর্থ হয়েছে।
রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব তাঁর মন্তব্যে বলেন যে, “কবজ প্রযুক্তি” রেলের কর্মক্ষমতা ও সুরক্ষায় বিপ্লব আনবে। কিন্তু, অভিজ্ঞ কর্মী ও যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ইঙ্গিত দেয় যে, প্রকৃতপক্ষে প্রযুক্তিটি কোনো বাস্তব সুবিধা প্রদান করতে পারেনি। বাস্তবিক সমস্যা যেমন, ট্রেনের সময়মত চলাচল, নিরাপত্তা ও যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন এসেছে বলে তথ্য নেই।
প্রযুক্তিগত ত্রুটির পাশাপাশি প্রশাসনিক দুর্বলতাও উদ্বেগের কারণ। প্রযুক্তির বাস্তবায়নে যদি প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় না থাকে, তবে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিশ্রুতি কেবল শ্বেতপত্রে পরিণত হবে। রেল মন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে – এই প্রযুক্তি নিয়ে যে উচ্চ মাত্রার দাবি করা হয়েছে, তা মাঠের বাস্তব চিত্রের সাথে কতখানি সঙ্গতিপূর্ণ?
যেখানে ভারতীয় রেলওয়ে “কবজ প্রযুক্তি” প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে এর কার্যকারিতা ও প্রয়োগ নিয়ে পরিপূর্ণ স্পষ্টতা অনুপস্থিত। রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে এখন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে স্পষ্ট করে জানতে হবে – প্রকৃতপক্ষে, এই প্রযুক্তি রেল পরিবহনে কার্যকরভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কিনা, এবং যদি না হয়, তাহলে তা বাস্তবায়নের ত্রুটির কারণ কী। প্রশ্ন উঠছে – রেল মন্ত্রীর আত্মপ্রচার জন্য ঘোষণা বনাম নির্মম বাস্তবতা।
এ প্রযুক্তির প্রতিশ্রুতি কি শুধু কথায় সীমাবদ্ধ?