নিউজ ডেস্ক : বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী প্রচারে ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না দিলীপ ঘোষ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতলকুচি নিয়ে দিলীপের মন্তব্যের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। কমিশনের এই ঘোষণা শোনার পরে সংবাদমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নববর্ষ মানে তো আসলে ছুটির দিন। এই নিষেধাজ্ঞার মানে কী! ভালই হয়েছে। উনি মন্ডা মিঠাই খাবেন।’’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয় রাজ্য রাজনীতি। এর পরের দিন রবিবার বরাহনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় দিলীপ বলেন, ‘‘ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলখুচিতে দেখেছেন কী হয়েছে। জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’’ গত বুধবার ওই বক্তব্যের জন্য কমিশন দিলীপকে নোটিস পাঠিয়েছিল। বুধবার তার জবাবও দেন তিনি। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়েই এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত।
এর আগে একই রকম ব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও রকম নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারেননি মমতা। এর প্রতিবাদে কলকাতায় গাঁধী মূর্তির নীচে ধর্নায় বসেন মমতা। সেই দিন থেকেই দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে তৃণমূল। এর পরে মঙ্গলবার থেকে রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা হাবড়ার প্রার্থী রাহুল সিংহের প্রচারে ৪৮ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। বৃহস্পতিবার সেই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হতে না হতেই দিলীপের প্রচারে নিষিদ্ধ করল কমিশন। এর আগে একই রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় যোগী আদিত্যনাথ এর ওপরেও। তবে মোদি অমিত শাহ এখনও পর্যন্ত বহু বিতর্কিত এবং তাদের সাংবিধানিক পদমর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক মন্তব্য করলেও কমিশন কোনো নোটিশ পর্যন্ত পাঠায়নি বলে অভিযোগ অনেকের। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের মতে, কমিশন লোক দেখানোর জন্য এই সময়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিজেপি নেতাদের ওপর।
বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকেও এদিন নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। শীতলকুচি নিয়ে তিনিও আপত্তিকর মন্তব্য করেন।