
উত্তরপ্রদেশের মেরুটের আইআইএমটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, খোলা স্থানে নামাজ পড়ার অভিযোগে এক মুসলিম ছাত্রকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওই ছাত্রের নাম খালিদ প্রধান (অন্যান্য নাম খালিদ মেওয়াতি)। ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় গোরা হিন্দু গোষ্ঠীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটেছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের খোলা জায়গায় জামাতে নামাজ আদায় করছেন।
এই ভিডিওটি হোলি উদযাপন ও রমজানের দ্বিতীয় শুক্রবারের সঙ্গে সমাপতিত হওয়ায় সম্প্রদায়গত উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ছাত্র খালিদ প্রধানসহ তিন নিরাপত্তাকর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানায়। সদর দেহাতের সার্কেল অফিসার শিব প্রতাপ সিংহ নিশ্চিত করেছেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর খালিদকে আটক করা হয়।
এনজেএস-এর ধারা ২৯৯ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত কাজ) ও তথ্য প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০০৮-এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন কার্তিক হিন্দু নামে এক ব্যক্তি, যিনি ঘটনাটিকে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র সুনিল শর্মা জানান, অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, নামাজ পড়ার ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে সম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আপলোড করা হয়েছিল। স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলোর দাবি, হোলির সময় ভিডিওটি শেয়ার করে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারেরও দাবি তোলে।

যদিও হোলি উদযাপনে উল্লেখযোগ্য কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে প্রশাসন। নিরাপত্তা জোরদার করা সত্ত্বেও খালিদের গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিতর্ক নতুন করে তুলেছে।
খালিদের পরিবার ও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ এই গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করে বলছে, “নামাজ পড়া ব্যক্তিগত ধর্মীয় অধিকারের অংশ।” অন্যদিকে, হিন্দু সংগঠনগুলোর যুক্তি, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণহারে ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্প্রদায়িক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।”
পুলিশ জানিয়েছে, আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সকল ধর্মের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানায়।