আতিয়া সুলতানা তাইয়্যিবা
এনবিটিভি নিউজ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস। তবুও থামেনি ভারত- চিন সংঘর্ষ। সবারই জানা, দুই দেশই সীমান্ত বিবাদ নিয়ে এর আগেও বহুবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। ঘটনাটি ভিন্ন দিকে মোড় ঘুরিয়েছে সম্প্রতি চীনের সেনাবাহিনীর হাতে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যুতে।
প্রায় ৪ হাজার ৩৮৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সীমানা রয়েছে ভারতের সঙ্গে চীনের। চীন এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিকে ব্যবহার করে ভারতের ভিতরে প্রায় ঢুকে পড়ছে এবং তিব্বতের মধ্যে দ্রুত গতিতে রেলপথ নির্মাণ করেছে দেশটি। ২০২১ সালের মধ্যে তা শেষ করে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সে দেশের সরকার। ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত এলাকাকে ছুঁয়ে যাবে এই রেলপথ নির্মাণ হয়ে গেলে।
চলতি মাসের মধ্যেই চিনের নিজস্ব একটি সংস্থা এই রেললাইন তৈরির কাজ অনেকটাই সেরে ফেলেছে, চীনের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম থেকে জানা যায়। রেলব্রীজ তৈরি হয়ে গেছে। এই রেল ব্রীজ তৈরি করা হচ্ছে তিব্বতের ইয়ারলুং তাসানজোংপ এবং সিয়াং অঞ্চলের মধ্য দিয়ে। তিব্বতের যেখান থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ শুরু হয়েছে। সেখান থেকে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এঘটনার আগেও চীন বহুবার অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে এসেছে । গত বছর ডিসেম্বর মাসে অরুণাচল প্রদেশে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এর সফরের তীব্র বিরোধীতা করেছিলো চীন। এখন পর্যন্ত ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিয়ে চিনের সীমান্ত সংঘাত মেটাতে প্রায় ২১ দফা বৈঠকও হয়ে গিয়েছে দুই দেশের।
রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা,তিব্বত থেকে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত পর্যন্ত চিনের রেললাইন তৈরি নতুন করে ভারত- চীন উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করছে। চীনের তিব্বত থেকে বিস্তৃত প্রায় ৪৩৫ কিমি এই রেলপথ সংযুক্ত করবে দক্ষিণ তিব্বতের লাসাং, লিংঝি এবং নায়িংগেছি।
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমানা ঘেঁষা এই রেললাইনকে দ্বৈত ভাবে ব্যবহার করতে চায় চীন বলে বিশেষজ্ঞদের দাবী। কারণ ভারতের ভিতর চীনের সামরিক ও বেসামরিক কাজকর্ম সহজে করতে পারবে জন্য সীমান্ত এলাকার অনুন্নত সড়ক পথের বদলে রেলপথ ব্যবহার করে। চীন এখনও অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে আসছে। দুই দিকে পর্বত বিশিষ্ট তিব্বতের জাংমুং ইয়ারলুং থেকে তাসাংপো নদীর উপর তৈরি ডবল লেনের এই ব্রীজের মোট দৈর্ঘ্য ৫২৫কিমি।
তিব্বত থেকে তৈরি রেললাইনের ৪৭ টি টানেলের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসের ৭ তারিখে চীনের সংবাদ মাধ্যমে দাবী করে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যেই সম্পূর্ণ করে ফেলা হবে বাকি কাজ। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই দ্রুত গতিতে কাজও শুরু করে দিয়েছে চীন। তিব্বতের প্রথম ইলেকট্রনিক রেলওয়ে হবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫০০ফিট উচ্চতায় অবস্থিত এই রেললাইনটি। সেখানে ট্রেন চলবে প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিমি গতিবেগে। কুড়ি হাজার শ্রমিক নিয়ে এই রেললাইন তৈরির কাজ চলছে ২০১৪ সালের শেষ থেকে এবং শেষ হবে আগামী বছর ২০২১ সালে।