সারা বিশ্ব আজ কোভিডে আক্রান্ত৷ করোনার মারণ থাবায় মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের কয়েক লক্ষ মানুষের৷ সম্প্রতি সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ৷ করোনা জয়ের আশায় দিন গুণছে মানুষ৷ ঠিক যেমন ভাবে এক সময় ভয়ঙ্কর ব্যাধি যক্ষ্মাকে জয় করেছিল বিশ্ব৷ আজ ১০০ বছরে পা রাখল বিসিজি টিকা ৷
১৯২১ সালে প্যারিসের চেরাইট হাসপাতালে একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েই যক্ষ্মায় মৃত্যু হয়ছিল মায়ের৷ ওই মহিলার স্বামী ছিল না৷ ফলে জন্মেই অনাথ হয় শিশুটি৷ ওই শিশুটির শরীরেরও কি বাসা বাঁধবে যক্ষ্মা? এই আশঙ্কা থেকেই এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতালের চিকিৎসক বেঞ্জামিন হেল আর রেমন্ড টারপিন৷ ওই শিশুটির শরীরে বিসিজি টিকা প্রয়োগ করেন তারা৷
এই ঘটনার ঠিক দু’বছর আগে প্রাণীর শরীরে প্রোয়োগের পর ক্যালমেট আর গুয়েরিন বলেছিলেন, এই টিকা মানুষের শরীরেও প্রয়োগ করা যাবে৷ কিন্তু কে নেবে এই টিকা? স্বেচ্ছাসেবকের অভাবে চিকিৎসকরা এই টিকা মানব শীরের প্রয়োগ করতে পারেনি৷ সেই সুযোগই যেন এনে দিল অনাথ শিশুটি৷ তিন মাস ওই শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখার পর চিকিৎসকরা জানালেন, এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ৷ এর পর থেকেই শুরু হল শিশুদের টিকাকরণ৷
পৃথবীর বুকে আঝ অবধি যত দুরারগ্য ব্যাধি হানা দিয়েছে৷ তার মধ্যে অন্যতম হল যক্ষ্মা৷ এই জীবাণুও ছড়ায় বাতাসে ড্রপলেটের মাধ্যমে৷ ১৮৮২ সালে রবার্ট কথ প্রথম যক্ষ্মার জীবাণু মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস-কে তিনি চিহ্নিত করে তা পৃথক করেন৷ ১৯০০ সালে পাস্তুর ইনস্টিটিউটে এই ব্যাকটিরিয়াকে বাগে আনতে গবেষণা শুরু করেন আলবার্ট ক্যালমেট আর ক্যামিলে গুয়েরিন।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সকল দেশে ছোট বেলাতেই শিশুদের বিসিজি টিকা দেওয়া হয়েছে, সেই সকল দেশে করোনার প্রকোপও অনেকটাই কম৷ যদিও এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই৷ ভারতেও কিন্তু সিবিজি টিকা দেওয় হয়৷ রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা ভারতের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সদ্যোজাতের শরীরের সিবিসি টিকা দেওয়া হলে তাঁদের দেহে ইমিউন সিস্টেম এমন ভাবে পরিবর্তন হয় যে, করোনা ভাইরাস তাঁদের উপর হামলা করতে পারে না৷ ১০০ বছর আগে আবষ্কার হওয়া বসিজি টিকা তাই আরও একবার সংবাদ শিরোনামে৷