নিউজ ডেস্ক : বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে এখন সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি নিয়েই তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। ১৯৯২ সালে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের হৃদয়ের ওপর যে হামলা করেছিল উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদীরা তার ক্ষত শুকায়নি আজও। কিন্তু এরই মাঝে শুরু হল আরেক সম্ভাব্য বাবরি ধ্বংসের প্রস্তুতিপর্ব। রাম মন্দির নির্মাণের সূচনার সময়ে হিন্দুত্ববাদীদের স্লোগান ছিল,”বাবরি তো এক ঝাঁকি হ্যায় কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়।” সেই পথে বহু দূর এগিয়েছে গেরুয়া সন্ত্রাসীরা। ইতিমধ্যেই আদালতে তিনটি মামলা করা হয়েছে সপ্তদশ শতকে কালজয়ী মুঘল বাদশাহ আলমগীর ওরঙ্গজেব এর তৈরি ঈদগাহ মসজিদ অপসারণের জন্য। এবার সেই মামলাতেই নিজেদেরকে বাদী করতে চেয়ে মথুরার জেলা দায়রা আদালতে জমা পড়ে নয়টি আবেদন। গতকাল তার প্রত্যেকটি খারিজ করে দিল আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ যশবন্ত কুমার মিশ্র কর্তৃক গঠিত বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে, মথুরার জেলা সরকারের কাউন্সিল সানজাই গৌর জানিয়েছেন।
মসজিদ অপসারণের আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে, সিনিয়র দেওয়ানী বিচারকের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মোট তিনটি মামলা এখনও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রথম মামলাটি লখনউয়ের বাসিন্দা রঞ্জনা অগ্নিহোত্রীর দ্বারা কেশব দেব মন্দিরের শিশু দেবতা শ্রী কৃষ্ণ বিরাজমানের “পরবর্তী বন্ধু” এবং অন্য ছয় জনকে নিয়ে দায়ের করেছিলেন।
দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেছিলেন হিন্দু সেনা প্রধান মণীশ যাদব। তৃতীয়টি অ্যাডভোকেট মহেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের মাধ্যমে পাঁচ জন বাদী হয়ে দায়ের করেছিলেন।
মামলাগুলিতে শ্রী কৃষ্ণের জন্মস্থানের নিকটবর্তী কাত্র কেশব দেব মন্দিরের নিকট ১৩.৩৭-একর জায়গার ওপর ১৬৭৯-৭০ সালে মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের আদেশে নির্মিত মসজিদটি সরানোর দাবি জানানো হয়েছে।
তারা শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সংস্থা এবং শাহী ঈদগাহ ম্যানেজমেন্ট কমিটির মধ্যে মন্দিরের নিকটে মসজিদটির অস্তিত্বের অনুমতি দিয়ে আদালতের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত একটি চুক্তি বাতিলের ও দাবি জানিয়েছেন।
আদালতের তরফ থেকে আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর এই বিষয়ে দায়ের করা মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করা হয়েছে ২২ শে মার্চ। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং সেখানকার পুরোহিতদের সংগঠন মসজিদ অপসারণের জন্য করা সমস্ত আবেদন গুলিকে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাম্প্রদায়িক বাদানুবাদ সৃষ্টির কারণ হিসাবে মনে করছেন। তারা এই মামলাগুলির বিরোধিতা করে এগুলিকে বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন। অন্যদিকে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বজরং দল এবং আরএসএস এর অন্যান্য শাখা সংগঠন মসজিদের অপসারণ চেয়েছে।