খারাপ সময় যেন কিছুতেই কাটছে না বেঙ্গালুরু এফসি’র। টানা আট ম্যাচে জয়হীন। ক্লাবের দীর্ঘ আট বছরের ইতিহাসে দক্ষিণের দলটির এমন করুণ দশা এর আগে প্রত্যক্ষ করেনি দেশের ফুটবল অনুরাগীরা। বৃহস্পতিবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে ৮৫ মিনিট অবধি দু’গোলে এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া করলেন সুনীল ছেত্রীরা। উলটোদিকে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচের অন্তিম মিনিটে দুর্দান্ত প্রত্যাঘাত হেনে মূল্যবান এক পয়েন্ট কুড়িয়ে নিল দারুণ ছন্দে থাকা হায়দরাবাদ এফসি।
দু’দলই এদিন তাদের গত ম্যাচের একাদশে দু’টি করে পরিবর্তন এনে প্রথম একাদশ সাজায়। বেঙ্গালুরুর জার্সিতে প্রথমবারের জন্য প্রথম একাদশে শুরু করেন লিও অগাস্টিন। ম্যাচের শুরুতেই চোটের ধাক্কায় বেঙ্গালুরু কোচ নৌসাদ মুসার স্ট্র্যাটেজি কিছুটা হলেও ধাক্কা খায়। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার জুয়ানন চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় খানিকটা বাধ্য হয়েই পরাগ শ্রীবাসকে মাঠে নামান মুসা। তবে এর কিছু সময় বাদেই ম্যাচে লিড নেয় বেঙ্গালুরু। ফ্রি-কিক থেকে ক্লেইটন সিলভার বাক খাওয়ানো ডেলিভারিতে মাথা ছুঁইয়ে বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। গোল খেয়ে তা পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে নিজামরা। কিন্তু বাকি সবকিছু করলেও ফাইনাল থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন হায়দরাবাদ ফুটবলাররা।
একটি ক্ষেত্রে লেফট-ব্যাক আকাশ মিশ্রর দুরন্ত ক্রস বেঙ্গালুরু বক্সে আছড়ে পড়লেও তা জালে জড়ানোর মত কেউ ছিলেন না। প্রথমার্ধে দু’দলই দু’টি করে সুযোগের অপচয় করে। বিরতির পর কার্যকরী ফুটবল খেলতে শুরু করে হায়দরাবাদ। আরিদানে সান্তানার কাছে সমতা ফেরানোর একাধিক সুযোগ আসলেও তিনি তা কাজে লাগাতে পারেননি। গুরপ্রীতের দস্তানায় আটকে যায় তাঁর প্রয়াস। উলটে ৬১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে নিজামরা। হিতেশ শর্মার ভুল পাস লিও অগাস্টিনের পায়ে জমা পড়লে গোলের সামনে অরক্ষিত জমিতে সোলো রানে বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের পিছনে ফেলেন তিনি। এরপর ডানপায়ের আউটসাইড কিকে বিপক্ষ গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জালে রাখেন লিও।
ম্যাচ যখন অনেকটাই ঢলে পড়েছে ব্লুজ’দের দিকে তখন ৮৫ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে রোহিত দানুকে নামিয়ে দিনের শেষ চালটা দেন হায়দরাবাদ কোচ। মাঠে নামার পরের মিনিটেই কাউন্টার-অ্যাটাকে ডানপ্রান্ত থেকে বক্সে ঠিকানা লেখা ক্রস পাঠান দানু। বিপক্ষ এক ডিফেন্ডারের মাথায় প্রতিহত হয়ে সেই ক্রস সান্তানার পায়ে পড়তেই ব্যবধান কমান স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। ব্যবধান কমিয়ে সমতা ফেরানোর আশায় শেষের কয়েকমিনিট বিপক্ষ বক্সে আরও চাপ বাড়ায় হায়দরাবাদ। নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে ফলও মেলে।
৯০ মিনিটে ডানপ্রান্তিক ক্রস থেকে হায়দরাবাদের একটি আক্রমণ বেঙ্গালুরু রক্ষণে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে রোনাল্ড আলবার্গের বাড়ানো থ্রু অফসাইড ট্র্যাপ করে একেবারে গোলের সামনে রিসিভ করেন সান্দাজা। একা গুরপ্রীতকে পেয়ে ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে কোনও ভুল করেননি স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। সেইসঙ্গে উত্তেজক ম্যাচে পয়েন্ট ভাগ করে মাঠ ছাড়ে দুই দল। এদিনের ম্যাচে ড্র’য়ের পর ১৪ ম্যাচ খেলে আটে থাকা বেঙ্গালুরুর সংগ্রহে ১৫ পয়েন্ট। সমসংখ্যক ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নিজামরা।