আব্দুস সামাদ, জঙ্গিপুর:- আবারও চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যু হল প্রসূতি মায়ের। জঙ্গিপুর মহাকুমা হাসপাতালে রোজিনা বিবি ওরফে পিঙ্কি নামে বছর তেত্রিশের মহিলা মারা যান। মাতৃহারা হল চার সন্তান। জানা গিয়েছে, ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের কর্মচারীদের অবহেলায় মৃত্যু হয় এই প্রসূতি মায়ের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসা করানো হতো ডাক্তার বাবুল চন্দ্র দেবের কাছে। এবং তাঁর পরামর্শে ভর্তি করা হয় গর্ভবতী মহিলাকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এবং রাতে চরম পর্যায়ে প্রসব যন্ত্রণা ওঠে ওই প্রসূতি মহিলার। ডাক্তার এবং নার্সদের ডাকা ডাকি করা হলেও কোনো কর্নপাত করেননি তাঁরা। চিকিৎসকের অনুপস্তিতে প্রসব হয় এবং কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তারপর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ওই মহিলার। এবং সারারাত রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। সকালে ডাক্তার এসে দেখেন প্রসুতি মায়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত ক্ষরণ হওয়ায় অবস্থা আশঙ্কাজনক। এবং দ্রুত রুগীর পরিজনদের রক্তের ব্যাবস্থা করতে বলেন ডাক্তার। রক্তের ব্যবস্থা হলেও হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষী এবং নার্সরা রুগীর পরিজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় রক্ত পৌঁছাতে দেরি হয় বলে অভিযোগ। এবং তারপরেই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়।
এই নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। তারপরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
তবে এই ঘটনায় বাবুল চন্দ্র দে -সহ নার্স, ডাক্তারদের বিরুদ্ধে রুগীদের প্রতি অবহেলা, অমানবিক আচরণ —এই ধরনের অভিযোগ উঠে আসছে। একাধিকবার ডাক্তার এবং নার্সদের দূর্ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকা জুড়ে। ডাক্তাররা মোটা অঙ্কের ফি নিয়ে বাইরে রুগী দেখতেই ব্যস্ত থাকছেন সর্বদা, এমনই অভিযোগ মৃতর পরিজনদের। অবহেলায় পড়ে থাকছেন সরকারি হাসপাতালের রুগীরা।
জানা গিয়েছে, ওই প্রুসূতি মহিলার বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার মিঠিপুর অঞ্চলের মুকুন্দপুর গ্রামে। এই নিয়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারে কান্নার রোল, আর্তনাদে ভেসে উঠেছে আত্মীয় পরিজনেরা।