Monday, June 9, 2025
35 C
Kolkata

স্কুল-মাদ্রাসা খুললেও দৌলতখানে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ড্রপ আউটের আশঙ্কা

মোঃ ছিদ্দিক, বরিশালঃ  করোনা মহামারীর দীর্ঘ ৫৪৩ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হলেও বহু শিক্ষার্থী আর বিদ্যালয়মুখী হবে না। দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ৩০ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এদের একটি বড় অংশ বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। দৌলতখান উপজেলার শতবর্ষী সুকদেব মদন মোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক ছাত্রীর করোনাকালীন বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ছেলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হারও কম নয়।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হোসেন হারুন বলেন, বর্তমানে স্কুলে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। অনুপস্থিত ছাত্রীর সংখ্যা ৫০। অনুপস্থিত ছাত্রীদের এ সংখ্যা মোট মেয়েশিক্ষার্থীর ৩০ শতাংশ। শোনা যাচ্ছে, করোনাকালে এদের সবার বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে। অনুপস্থিত ছাত্রদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। পড়ালেখা ছেড়ে তারা উপার্জনমুখী বিভিন্ন কাজে যোগ দিয়েছে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার কারণে টানা ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখানকার নিম্নআয়ের দরিদ্র অভিভাবকরা তাদের ছেলেদের নদীতে মাছ ধরা, দিনমজুর, ইটভাটার শ্রমিক, দোকান কর্মচারী ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজে দিয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঝরে পড়াদের মধ্যে জেলে পরিবারের সন্তানরাই বেশি।ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিনেই তাদের বান্ধবীর বিয়ে হওয়ার খবর শুনে। এরপর তাদের সবার মন খারাপ হয়ে যায়। অনেকদিন পর বিদ্যালয় খোলার আনন্দের চেয়ে মন খারাপই বেশি ছিল তাদের।

সুকদেব মদন মোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক বলেন, গত দেড় বছরে তার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শতাধিক ছাত্রীর গোপনে বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কিছু শিক্ষার্থী ছোটখাটো চাকরি ও ব্যবসায় যোগ দিয়েছে। উপজেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে হাজীপুর সিনিয়র মাদ্রাসা, জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খাদিজা খানম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জয়নাল আবেদীন ল্যাবরেটরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহের একই তথ্য পাওয়া গেছে।

তবে উপজেলার দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ জানান, ওই দুই বিদ্যালয়ে ঝরে পড়ার কোনো তথ্য নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজান আলী শেখ বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করেছি। করোনাকালীন দীর্ঘ ছুটিতে দরিদ্র অভিভাবকরা মেয়েদের ঘরে বসিয়ে না রেখে অনেককে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। তবে ঝরে পড়ার হার ১৮ থেকে ২০ শতাংশ হবে। ঝরে পড়াদের মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীই বেশি।

Hot this week

গাজার রাফাহ সহায়তা কেন্দ্রেই মৃত্যু: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৭ জন ফিলিস্তিনি

ফের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রাফাহ শহরের একটি...

মাদ্রাসা রক্ষায় আজমগড়ে সম্মেলন, আদালতের পথে জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে আয়োজিত হয় একটি মাদ্রাসা রক্ষা সম্মেলন...

ঈদের আগে উত্তেজনা: গাজিয়াবাদে মুসলিম মাংস বিক্রেতাকে গুলি করার হুমকি বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর

উত্তরপ্রদেশর গাজিয়াবাদে বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর সম্প্রতি একটি...

টাকার পরিমান দেখে চোখ ধাঁধিয়ে গেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার, গ্রেপ্তার ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অফিসার

চোখ ধাঁধানো গুপ্তধনের সন্ধান। ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অফিসার অমিত...

Topics

গাজার রাফাহ সহায়তা কেন্দ্রেই মৃত্যু: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৭ জন ফিলিস্তিনি

ফের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রাফাহ শহরের একটি...

মাদ্রাসা রক্ষায় আজমগড়ে সম্মেলন, আদালতের পথে জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে আয়োজিত হয় একটি মাদ্রাসা রক্ষা সম্মেলন...

গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা!ধ্বংস করা হল ২৪০টির বেশি ঘর, নিহত হাজার হাজার নিরীহ মানুষ

গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে।...

Related Articles

Popular Categories