P M Care Fund| দেশে যখন কোভিড পরিস্থিতি উত্তাল, ঠিক তখন আমাদের ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন এই পি এম কেয়ার ফান্ড। এই ফান্ডের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই। এই ফান্ড যখন রিলিজ করে তখন দাবী করা হয়,এই ফান্ডে যে যা দান করবে তার সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে পি এম কেয়ার এর ওয়েবসাইটে। কিন্তু গল্পটা এখন অন্য। এই ফান্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমান, এবং তার খরচের হিসাব দেওয়া হচ্ছেনা দেশবাসীকে। সম্পূর্ণভাবে সরকারি নিয়ম নীতি মেনে এবং অশোক স্তম্ভের ছবি রেখে ফান্ডের প্রচার সত্ত্বেও ভারত সরকার এই ফান্ডকে একটি প্রাইভেট ফান্ড বলে ঘোষণা করে। এরপর ডিসেম্বর ২০২০, এই ফান্ডকে একটি পাব্লিক ফান্ড বলে ঘোষণা করলেও পি এম কেয়ার ফান্ড তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকার করে। যদিও আবারো ২৩শে সেপ্টেম্বর,২০২১, RTI এর উত্তরে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, IT’S A PRIVATE CHARITABLE TRUST | এই ফান্ডের টাকার নিয়ে নরেন্দ্র মোদীরও প্রশ্ন করার অধিকার নেই।
যদিও এই ফান্ডের তরফ থেকে টাকার কোন হিসেব দেওয়া হয়নি,তবুও NATIONAL STATISTICAL OFFICE মে-জুন,২০২০-র হিসেব অনুযায়ী পি এম কেয়ার ফান্ডে অর্থের পরিমান ১০০০০-১১০০০ কোটি টাকা। এই ফান্ডে টাকা দিয়েছে celebrities, athletes, actors, govt and private corporations| L&T দিয়েছে ১৫০ কোটি টাকা, এ ছাড়াও Infosys, Adani, Reliance কোম্পানিও দান করেছে এই ফান্ডে। সরকারি সংস্থার মধ্যে LIC ১১৩.৬৩ কোটি, SBI ১৭৫.৯৫ কোটি, RBI এমপ্লয়ীদের স্যালারি থেকে দিয়েছে ৭.৩৪ কোটি টাকা এবং রেলওয়ে এমপ্লয়ীরা দিয়েছেন ১৫১ কোটি টাকা। এবার প্রশ্ন কোথায় গেল এতো টাকা ? চলুন দেখে নেওয়া যাক সরকারের দেওয়া হিসাবের খতিয়ান ঃ
- মে,২০২০
৩১০০ কোটি টাকা খরচের যে হিসাব সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে তা হলঃ
- ভারতে ৫০০০০ ভেন্টিলেটর প্রদান, যাতে খরচ ২০০০ কোটি
- ১০০০ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যের জন্য
- ১০০ কোটি টাকা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য
পরিযায়ী শ্রমিক ও ভ্যাকসিন তৈরির হিসাব নিয়ে আলোচনা না করলেও যদি শুধু ভেন্টিলেটর নিয়ে আলোচনা করা হয় তাহলেই সরকারের অস্বচ্ছতার একটা পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যাবে।
- জুন,২০২০
প্রতিশ্রুতি মত ৫০০০০ ভেন্টিলেটরের মধ্যে মাত্র ৬% ভেন্টিলেটর তৈরি হয়েছে। এই ভেন্টিলেটর বানানোর টেন্ডর দেওয়া হয় Jyoti CNC Automation ও Med Tech Zone কে। Jyoti CNC Automation, যাদের নামে অলরেডি scam report রয়েছে।
- সেপ্টেম্বর,২০২০
১০০০০ ভেন্টিলেটর বানানোর tender দেওয়া হয় Trivitron Healthcare কে। যে সংস্থার ভেন্টিলেটর বানানোর কোন অভিজ্ঞতা নেয়।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, গুজরাট অফিসিয়ালের রিপোর্ট অনুসারে লোকাল তৈরি ভেন্টিলেটরগুলি নিম্মমানের। এবং যে সকল জায়গায় এই ভেন্টিলেটরগুলি প্রদান করা হয় সেই সকল জায়গাতে ভেন্টিলেটরগুলি লক্ষপুরনে ব্যর্থ হয়। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে এই খাতে খরচ করা পুরো টাকাটাই আসলে নষ্ট।
- অক্টোবর,২০২০
ভারত সরকার ১৬২টা অক্সিজেন প্ল্যান্টের অনলাইন tender দেয়। এই tender অনুযায়ী central medical services society of indiaর উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় বিভিন্ন রাজ্যে এই ১৬২টা অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা।
- এপ্রিল,২০২০
প্রায় ৬ মাসের মাথায় মাত্র ১১টা প্ল্যান্ট সম্পূর্ণভাবে ইন্সটল হয় এবং ৫টা তখনও কাজ চলছে। যেখানে ১টা অক্সিজেন প্ল্যান্ট সম্পূর্ণ ভাবে ইন্সটল করতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ সময় লাগে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য Ministry of Health এর তরফ থেকে তখন ইন্সটল হওয়া অক্সিজেন প্ল্যান্টের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৩৩ টা।
- ২৬ এপ্রিল,২০২১
আবারও সরকারের তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ৫৫১টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট এবং ১০০০০০ টি পোর্টেবল oxygen concentrator স্থাপনের। সেটাও এখনও ধোঁয়াশাই।
- উপসংহার ঃ
দেড় বছর পর যদি প্রতিশ্রুতির ঝুলি থেকে মিলিয়ে দেখা যায় কি পেলাম আমরা তাহলে সে গুলো হলঃ
- স্বচ্ছতার অভাব
- ভারতে ভ্যাকসিনের অভাব
- And most importantly, Delhi Highcourt announced P M CARE FUND is not a govt. fund | … and the list go on …
মানে সবশেষে বলা যায়, ভারতবাসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাসি মুখ, মিষ্টি কথা,চোখের জল আর মন কি বাতে ভুলে just বোকা বনে গেল। আর টাকা কি গেল বিজেপির পার্টি ফান্ডে? উত্তর দেবে কে?