নিউজ ডেস্ক : বিজেপি নেতাদের মধ্য থেকে অবৈজ্ঞানিক, অসামাজিক, অনৈতিক, অবাস্তব,দায়িত্বজ্ঞানহীন মতব্য আজ নতুন নয়। তবে তাই বলে একটা দেশের রাজনৈতিক দল সরকার গড়বে অন্য দেশে। তাও আবার সেই দুটো দেশে যাদের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সরকারের সম্পর্ক একদম আদায় কাঁচকলায়। হ্যাঁ, এমনই মন্তব্য এবার করে বসলেন এমন সব অবাস্তব হাস্যকর বক্তব্য দেওয়া বিজেপি নেতাদের মধ্যে অন্যতম ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি এবার বললেন, আমিতজি এবার নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায় সরকার গড়বেন। স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে হইচই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে হাসির খোরাক হয়ে উঠেছেন এই বিজেপি নেতা।
শনিবার আগরতলায় দলের একটি সাংগঠনিক কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিপ্লব দেব। সেখানে তিনি বলেন, “শুধু নিজেদের দেশে নয়। পড়শি রাষ্ট্রগুলিতে ছড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলের। নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় সরকার গঠন করার নকশা তৈরি করেছে বিজেপি।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির চাণক্যর সাংগঠনিক ক্ষমতার প্রশংসা করে ত্রিপুরার (Tripura) মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্টেট গেস্ট হাউসে ২০১৮ সালে আমরা আলোচনা করছিলাম। সেই সময় বিজেপির উত্তর-পূর্ব জোনের পর্যবেক্ষক অজয় জামওয়াল বলেছিলেন, অমিত শাহ বলেছেন দেশের সব রাজ্যে বিজেপি প্রতিষ্ঠা পেয়ে গিয়েছে। এবার নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় দলের বিস্তার ঘটাতে হবে। সেখানে নির্বাচন জিতে সরকার গড়তে হবে।” বলে রাখা ভাল, বিপ্লব দেব যে সময়ের কথা বলছেন, তখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন অমিত শাহ।
নেট নাগরিকরা বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলতে শুরু করেছেন, ভারতে বর্তমানে যেকোনো ত্রিশঙ্কু বিধানসভা গুলোতে অমিত শাহ যে নিজের ইচ্ছা মতো ঘোড়া ক্রয় করেন তার মূল চালিকা শক্তি হল ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন সিবিআই, ইডি, এন আই এ ইত্যাদি। কিন্তু নেপাল বা শ্রীলঙ্কার ওই প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে কিনবেন অমিত শাহ? তবে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনার মাঝে জাতীয় স্তরের সব মিডিয়াতে এই বিষয়টি এখন গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হওয়ার ফলে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের ফলে ভারতের সঙ্গে ওই দুটি দেশের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্কের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই পাকিস্তান ছাড়া ভারতের সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে এই অভিযোগ প্রায়শই শোনা যায় যে ভারত তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং তাদের সরকারকে নিয়ন্ত্রন করতে চায়, এই মন্তব্যের পরে যে এমন অভিযোগকারীদের মনোবল আরো চাঙ্গা হবে এবং তারা তাদের অভিযোগের সপক্ষে একটা নামমাত্র প্রমাণও জোগাড় করতে পারবেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।