মহা কুম্ভে দেশের নানান প্রান্ত থেকে ভক্ত সমাগম ঘটেছে। ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশের মানুষরাও এসে সামিল হয়েছে এই মেলায়, এমনকি প্রয়াগরাজের মহিমায় আকৃষ্ট হয়েছে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা এমনই এক অতিথি হলেন রামনাথ মিশ্র, করাচির পাঁচমুখী হনুমান মন্দির ও শ্মশানের প্রধান পুরোহিত। তিনি দাবি করেন যে, করাচিতে তাদের মিশ্র পরিবারই একমাত্র বিদ্যমান। তিনি পাকিস্তান থেকে ৪০০ হিন্দু ও শিখের অস্থি সংগ্রহ করে হরিদ্বারে বিসর্জন দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্যে এসেছেন।
ভারতে এসে আপাতত মহা কুম্ভ এলাকার সেক্টর ২৪-এ পরিবারসহ রয়েছেন মিশ্র। তিনি স্বামী অধোক্ষজানন্দের শিবিরে তাঁর নয় বছর বয়সী ছেলের উপনয়ন সংস্কার সম্পন্ন করেন। তিনি জানান, সংঘমের পবিত্র জল নিয়ে দিল্লি যাবেন, যেখানে ২১ ফেব্রুয়ারি নিগমবোধ ঘাটে অস্থি কলসের পূজা সম্পন্ন হবে।
তিনি জানান, সংঘমের পবিত্র জল অস্থির উপর ছিটিয়ে দিল্লি থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত এক রথযাত্রা বের করা হবে। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি হরিদ্বারের সতী ঘাটে ১০০ লিটার দুধের প্রবাহের মাধ্যমে অস্থি বিসর্জন দেওয়া হবে।
মিশ্র তাঁর মা কমলা দেবী, স্ত্রী, ছেলে দেবেন্দ্রনাথ মিশ্র, দুই মেয়ে ও এক ভাগ্নেকে নিয়ে স্বামী অধোক্ষজানন্দ দেবতীর্থের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, এক সময় করাচির পাঁচমুখী হনুমান মন্দির উগ্রবাড়ি ইসলামপন্থীদের দ্বারা ধ্বংসকৃত হয় ও অনেক অংশ দখল হয়ে যায়, তবে বহু প্রচেষ্টার পর তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। সেখানে অবস্থিত শ্মশানটিও সংস্কার করা হয়েছে, যেখানে এখন একসঙ্গে ১৫টি দেহ দাহ করা যেতে পারে।
শ্মশানে অস্থি সংরক্ষণের জন্য একটি ঘরও নির্মিত হয়েছে, যেখানে প্রায় নয় বছরে অসংখ্য অস্থি কলস সংগ্রহ করা হয়েছে।
পন্ডিত মিশ্র, যার পূর্বপুরুষরা ১,৫০০ বছর ধরে পাঁচমুখী হনুমান মন্দিরের সেবা করে আসছেন, জানান ভারতের ভিসা পাওয়ার পরথেকেই ওই শ্মশানে দাহ হওয়া হিন্দুদের অস্থি সংগ্রহ করতে শুরু করেন তিনি। উদ্দেশ ছিল ভারতে হরিদ্বারে এসে দেয়া হবে অস্থি বিসর্জন। পাকিস্তানে মৃত হিন্দুদের নির্বাণ লাভ, এই ছিল পন্ডিত মিশ্রর এক মাত্র উদ্দেশ্য
যদিও তিনি ভারতে থাকা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে নেই, মিশ্র দাবি করেন যে তাঁর পূর্বপুরুষরা তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবার প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গম লাগোয়া চাকিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিল।