বিশ্বের সেরা ১০ সুন্দরীর তালিকায় বাঙালির গায়ত্রী দেবী, কে সেই সুন্দরী?

এনবিটিভি ডেস্ক:  রূপে গুনে সর্বগুনা সম্পন্ন ছিলেন তিনি। ভালোবাসতেন নিজের ধারায় চলতে। তাঁর ফ্যাশন ভাবনা নজর কাড়তো সকলের। তিনি আর কেউ নন রাজমাতা গায়ত্রী দেবী।

যখন মেয়ে মানেই ছিল সংসার ধর্ম আর সন্তান পালন করা, তখন সামাজিক সব ধ্যান ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে নিজেকে মেলে ধরে ছিলেন অন্য রুপে। পুরুষদের সাথে খেলতেন গল্ফ, পোলো,পারদর্শী ছিলেন ঘোড়ায় চড়ায়। ভারতে প্রথম ‘মার্সিডিজ বেঞ্জ’ গাড়ি কিনে ছিলেন তিনি।

বাবা ছিলেন মহারাজা জিদেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারের রাজা আর মা ছিলেন ইন্দিরা দেবী। মা ছিলেন বারোদা রাজ পরিবারের কন্যা। ১৯১৯ সালের ২৩ শে মে জন্মগ্রহণ করেন লন্ডনে। চার ভাই বোনের মধ্যে কনিষ্ঠতম ছিলেন গায়ত্রী দেবী।

বাড়িতে ব্রিটিশ শিক্ষক রেখে চলতো পড়াশোনা। ভালো বাংলা শেখার জন্য ও বাইরের পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য মা ভর্তি করে ছিলেন শান্তিনিকেতনে। সেখানে ঘরোয়া পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে ছিলেন সবার সঙ্গে। উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়ে ছিলেন সুদূর সুইজারল্যান্ডেও।

এরপর কলকাতায় প্রথম আলাপ হয় জয়পুরের রাজা মান সিং এর সঙ্গে। ১৯৪০ সালে বিয়ে করেন তাঁকে। গায়ত্রী ছিলেন তার তৃতীয়তম স্ত্রী। কিন্তু গায়ত্রী দেবীর সঙ্গে সব থেকে গাড় সম্পর্ক ছিল তার। তার স্বাধীনচেতা মনোভাব দেখেই পছন্দ করেছিলেন রাজা মান সিং।

জয়পুরের রক্ষনশীল পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরে ছিলেন সাবলিল ভাবে, প্রজাদের মন জয় করে হয়েছিলেন রাজমাতা গায়ত্রী দেবী। রাজা গোপালাচরির ‘স্বতন্ত্র’ পার্টি থেকে ১৯৬২ সালে ভোটে দাড়িয়ে। জয়পুর থেকে রেকর্ড সংখ্যায় ভোটে জেতেন।

১৯৭০ সালে প্রয়াত হন রাজা মান সিং। এরপর ১৯৭১ সালে দেশে এমার্জেন্সী কালীন সময়ে ইনকাম টাক্স ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে তেহার জেলে ৫ মাস জেল খাটেন। কিছুটা ভেঙ্গে পড়ে ছিলেন মানসিক ভাবে। কিন্তু সাবলিল ভাবে করে গেছেন সমস্ত কাজ, আপন করে নিয়েছিলেন প্রজাদের। মেয়েদের জন্য বানিয়ে ছিলেন স্কুল।

২০০৯ সালে লন্ডনে থাকাকালীন সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে জয়পুরে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।ভর্তি করা হয় সন্তোকবা দুরলবজি মেমোরিয়াল হসপিটালে। ২০০৯ সালের ২৯ শে জুলাই প্রয়াত হন রাজমাতা গায়ত্রী দেবী। শেষ হয় একটি অধ্যায়ের।

Latest articles

Related articles