নিউজ ডেস্ক : গত সপ্তাহে বিদেশমন্ত্রক এবং ভারতের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রদানের ব্যাপারে।নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক কে জানানো হয়েছে সেই সমস্ত দেশের নাম যে সমস্ত দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দেরকে এই পোস্টাল ভোটাধিকার প্রদান করা হবে আপাতত।মূলত আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র কানাডা অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড জাপান জার্মানি ফ্রান্স এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের এই ভোটাধিকার প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উপসাগরীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দেরকে এই ভোটাধিকার প্রদান করা হবে না, যে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে।পশ্চিমবঙ্গ কেরালা এবং তামিলনাড়ুতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনেকে প্রশ্ন তুলছে তাহলে কি বিজেপি বিরোধী ভোট গুলিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দেরকে এই প্রকল্পের বাইরে রাখা হলো। উল্লেখ্য ভারতীয় মুসলিমদের একটা বড় অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাত সৌদি আরব কাতার কুয়েত ওমান বাহারিন এর মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত রয়েছে যাদের বেশিরভাগই মোদি বিরোধী বলে মনে করা হয়।আবার আমেরিকা ফ্রান্স জার্মানি কানাডা অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের মতো দেশগুলোতে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে মোদি ভক্তের সংখ্যা অনেক রয়েছে বলে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে।
অবশ্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী ভারতীয়দেরকে আপাতত ভোটাধিকার প্রদান না করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের যুক্তি, যে সমস্ত দেশে গণতন্ত্র নেই সেই সমস্ত দেশে এই প্রক্রিয়া শুরু করা একটু মুশকিল কারণ সেই সমস্ত দেশের সরকারের তরফ থেকে এই ব্যাপারে সম্মতি নেওয়াটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে প্রশ্ন উঠছে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের এত ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কেন এই প্রকল্পের ব্যাপারে সম্মতি নিতে এতটা দ্বিধাগ্রস্থ মোদি সরকার যেখানে কৃষক আন্দোলনের ব্যাপারে জাস্টিন ট্রুডো করা মন্তব্যের কারণে ভারতবর্ষের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক একটু শীতল হলেও সেখান থেকে অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে।এমন প্রশ্ন ওঠার আরেকটি কারণ হলো গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই সবার চোখে নিরপেক্ষ ছিল না। বিরোধীদলীয় বিভিন্ন নেতাদেরকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচন কমিশন অনেকক্ষেত্রে অভিযুক্ত করলেও প্রধানমন্ত্রী মোদী বারবার সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করলেও নির্বাচন কমিশন কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এমনকি ইভিএম এর ব্যাপারে বিরোধীরা প্রবল আপত্তি তুললেও ভিভিপাট এর পরীক্ষার ব্যাপারে মোদি সরকারের নীতির সমর্থক নীতি ধরে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার অভাবে কয়েক মাস আগে এক নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেন।