চীন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের তীব্র দ্বিমুখী সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ভারতীয় সেনা!!

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

mcms

সাইফুল্লা লস্কর : দুই প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দী রাষ্ট্র চিন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের দ্বীমুখী সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ভারতীয় সেনা।দ্য ইকোনমিক টাইমস এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতীয় সেনা পূর্বের ১০ দিনের তুলনায় এখন ১৫ দিনের তীব্র দ্বিমুখী সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছেন, চীন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র সঙ্ঘাত এর জন্য উচ্চমাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে ভারতীয় সেনা, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনী। জেনারেল রাওয়াত ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি চিনের বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে সামরিক বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন ভারত কি এখনই পারবে পাকিস্তান এবং চীনের সম্মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে?

উল্লেখ্য ২০১৫ সালের কন্ট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল বা ক্যাগের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ভারতবর্ষ যেকোনো লড়াইয়ে গোলাবারুদের অভাবে ১০ দিনের বেশী টিকে থাকতে পারবে না। এই রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছিল ভারতের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের। সেই সময় থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার ১০ দিনের লড়াইয়ের লক্ষ নিয়ে গোলাবারুদ মজুদ করতে শুরু করেছিল। ক্যাগের রিপোর্টে আরো বলা হয়েছিল ভারতের স্থল সেনা, বিমান বাহিনী এবং নৌ বাহিনীর হাতে থাকা অস্ত্রশস্ত্রের ও গোলাবারুদের প্রায় ৬৮% মেয়াদ উত্তীর্ণ।এই রিপোর্টে মিগ-২১ এর মতো পুরানো যুদ্ধবিমান ব্যবহারের কথা বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছিল যে যুদ্ধ বিমান গুলি রাশিয়া বহুপূর্বে ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে। পুরানো যুদ্ধবিমানগুলিকে সরিয়ে ভারত দেশে তৈরি তেজাস বিমান বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করলেও তার প্রথম ভ্যারিয়েন্টে ৫৩ টি সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয় যার ফলে বিমান বাহিনী এই বিমান অন্তর্ভুক্ত করতে প্রাথমিকভাবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে। ২০১৮ সালে ভারতবর্ষের পূর্বতম বায়ুসেনা প্রধান এয়ার মার্শাল বিএস ধানোয়া বলেছিলেন ভারতীয় বিমানবাহিনী এতটা পুরনো বিমান ব্যবহার করে যতটা পুরানো গাড়িও ভারতের কোনো ব্যক্তি ব্যবহার করে না।ভারতের বিমানবাহিনীর এই পুরনো বিমান ব্যবহারের জন্যই বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সংখ্যা পৃথিবীর অন্যান্য বৃহৎ বিমান বাহিনীর তুলনায় অনেক বেশি।বিশেষ করে রাশিয়ার তৈরি মিগ সিরিজের বিমানগুলো প্রায়শই বিধ্বস্ত হয়।

এই সমস্ত সমস্যাগুলিকে মাথায় রেখে ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্তমানে ১৫ দিনের দ্বিমুখী নিবিড় সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই তৎপরতার মূল কারণ সীমান্তে চিনা সেনা বাহিনীর অনুপ্রবেশ এবং অতি দ্রুত গতিতে কৌশলগত অবকাঠামো নির্মাণ, সীমান্তে ঘনঘন পাকিস্তানের যুদ্ধ বিরোধী লঙ্ঘন এবং কাশ্মীরের মাত্রাতিরিক্ত অশান্ত পরিস্থিতি।তবে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে যদি যুদ্ধ ১৫ দিনের বেশি চলে তাহলে ভারতীয় সেনাবাহিনী তখন কিভাবে মোকাবিলা করবে শত্রুর? কারণ চীনের অর্থনীতি ভারতীয় অর্থনীতির প্রায় ৬ গুণেরও বেশি এবং চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাজেটের এর প্রায় ৬ গুণ।চিনের প্রতিরক্ষা ব্যয় বর্তমানে ২৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি যেখানে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের একটু বেশি।  আবার এটা অবশ্যম্ভাবী যে যেকোন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চীন সর্বদা পাকিস্তানকে সর্বতোভাবে তাদের পাশে পাবে সুতরাং সেই সম্মিলিত শক্তির সামনে এই স্বল্প প্রতিরক্ষা বাজেট এর ভারতীয় সেনাবাহিনী কিভাবে লড়াই করবে? এর জন্য ভারতীয় সেনার তরফ এক নতুন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে সরাসরি উচ্চমূল্যের বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র ক্রয় করা সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র লিজ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে ভারতীয়।ইতিমধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুই মার্কিন ড্রোন লীগ নিয়েছে এবং এফ -১৮ সুপার হর্নেট নিজে নেওয়ার জন্য আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।তবে হোয়াইট হাউসে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর ভারতবর্ষে চীনের বিরুদ্ধে কতটা আমেরিকার সাহায্য পাবে সেটা নিয়ে ও রয়েছে প্রশ্ন।কারণ জো বিডেনকে চিনের প্রতি একটি দুর্বল বলে মনে করে কূটনীতিকরা।তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ‘চায়না জো’ বলে কটাক্ষ করতেন। জো বাইডেন ও ইতিমধ্যে বলেছেন তার সামরিক নীতি নির্ধারিত হবে রাশিয়াকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে। তাই আমেরিকা যদি চীনের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে ইতিমধ্যে রাশিয়া থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করা ভারত কোন কৌশল গ্রহণ করবে সে প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে সবার।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর