পাকিস্তানকে সমর্থনের অভিযোগে ১৭ মুসলিমের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা : ৬ বছর পর জানাল আদালত

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

1

ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তানের জয় উদযাপন করার অভিযোগে ১৭ জন মুসলিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি ভূয়া বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশের একটি আদালত।

অভিযুক্তরা সবাই দক্ষিণে মধ্যপ্রদেশের মোহাদ গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার বাদীর অভিযোগ, পুলিশ সে সময় তাদের মিথ্যা বিবৃতি দিতে বাধ্য করেছিল। ছয় বছরের বেশি সময় এই মামলায় হয়রানির শিকার হওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট দেবন্দর শর্মা ১৬ জনকে খালাস দেন। আরেক অভিযুক্ত রুবাব নবাব নামে ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি অপমান সহ্য করতে না পেরে ২০১৯ সালে আত্মহত্যা করেন।

আদালত জানায়,  সমস্ত প্রমাণ, যুক্তি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে, এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি অভিযুক্তরা পাকিস্তানের পক্ষে স্লোগান দিয়ে আতশবাজি ‍পুড়িয়েছে। পুলিশ আইপিসির ১৫৩-এ ধারা অনুযায়ী কোন  প্রমাণ সরবরাহ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। 

আসামিপক্ষের আইনজীবী শোয়েব আহমেদ বলেন, অভিযোগকারী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার  জন্যে চাপ দেওয়া হয়েছিল।  তারা আদালতে সত্যটা বলেছেন। 

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৮ জুন লন্ডনের ওভাল স্টেডিয়ামে ভারত চ্যাম্পিয়ন ট্রফির ফাইনালে হেরে গেলে গ্রামবাসীরা পাকিস্তানকে সমর্থন করে স্লোগান দিয়েছে, মিষ্টি বিতরণ করে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৭ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

সংবাদমাধ্যমগুলোও অভিযুক্তদের “বিশ্বাসঘাতক” বলে প্রচার করতে থাকে।

ওই গ্রামের  প্রধান রফিক তদভি বলেন, “এই ঘটনার প্রভাব এতটাই গভীর যে ভারত ও পাকিস্তান খেলার সময় গ্রামবাসীরা ক্রিকেট খেলে না বা টিভিতেও দেখে না।

কারাগারে নির্যাতনের ব্যাপারে ভুক্তভোগী ইরফান বলেন, “আমাদের এমনভাবে ঘুমাতে দেওয়া হয়েছিল যেন কেউ তার পাশ পরিবর্তন করতে না পারে। আমরা খালি পেটে ঈদ কাটিয়েছি। আমাদের পরিবার বাইরে শুকনো রুটি খেয়ে ঈদ করেছে। আদালতে গেলে আইনজীবীরা চিৎকার করে বলেন, “দেশ কে গাদ্দারোঁ কো, গোলি মারো সেলুন কো” (বিশ্বাসঘাতকদের গুলি কর) এবং “আতঙ্কওয়াদিওঁ কো ফাঁসি দো” (সন্ত্রাসীদের ফাঁসি দাও)।

এ মামলায় দুই নাবালক মুবারিক তাদভি এবং জুবায়ের তাদভিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার করার সময় তাদের বয়স ছিল ১৬ বছর। ২০২২ সালের জুন মাসে কিশোর বিচার আদালত তাদের বেকুসুর খালাস দেয়।

জুবায়ের এখন ইন্দোরের মাজারের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “আমি পুলিশ ইন্সপেক্টর হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম, কিন্তু মামলা হওয়ার পরে  আমি আমার পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছি।”

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর