মধ্যপ্রদেশে মুসলিম চুড়ি বিক্রেতাকে বেধড়ক মারধর করল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা

 

রবিবার রাতে মধ্যপ্রদেশের ইন্ডোরে বঙ্গাঙ্গ এলাকায় এক মুসলিম চুড়ি বিক্রেতাকে মারধর করা ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তসলিম নামে সেই খুচরা বিক্রেতাকে মারধরের ভিডিও।স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রবিবার রাতে হঠাৎ তসলিমের ওপর চড়াও হয় কয়েকজন উগ্রবাদী হিন্দু। প্রথমে তার ব্যাগ থেকে ১০ হাজার রুপি কেড়ে নেয়া হয়। পরে তসলিমকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে তারা। চলে সাম্প্রদায়িক আক্রমণও।

এ ঘটনার পর ইন্দোর পুলিশ স্টেশনে শত শত মানুষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ক্ষোভ দেখান। পরে শেষ রাতের দিকে এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মুসলিম যুবককে পিটুনির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র পুলিশি তদন্তের বরাত দিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনার জন্য ওই মুসলিম যুবক ভুয়া নাম ব্যবহার করছিলেন। স্থানীয়রা এটি বুঝার পর তার ওপর হামলা চালান। এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়া উচিত নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাওয়া আক্রান্ত যুবকের নাম তসলিম। ইন্দোরের বনগঙ্গা এলাকার একটি জনাকীর্ণ সড়কে তাকে বেধড়ক মারপিট করছেন একদল যুবক। তাকে মারধরের সময় সাম্প্রদায়িক গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এ সময় শত শত মানুষ আশপাশে উপস্থিত থাকলেও কেউ তাকে সহায়তায় এগিয়ে আসেননি।

ব্যাগ থেকে চুড়ি বের করে নেওয়ার সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘যা খুশি নিয়ে নেন। তাকে আর এই এলাকায় দেখতে চাই না।’ শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তি আশপাশের সবাইকে এগিয়ে এসে মুসলিম চুড়ি বিক্রেতাকে মারধরের আহ্বান জানান। পরে তিন থেকে চারজন এগিয়ে এসে তাকে নির্দয়ভাবে মারপিট করেন।পুলিশের কাছে দায়েরকৃত অভিযোগে চুড়ি বিক্রেতা তসলিম বলেন, তারা এসে প্রথমে আমার নাম জানতে চান। নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে মারধর শুরু করেন। তারা আমার কাছে থাকা ১০ হাজার রুপিও ছিনিয়ে নেন এবং চুড়ি ও অন্যান্য পণ্য ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার পর অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, হামলা, ডাকাতি, ভয় দেখানো এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র বলেন, এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়া উচিত নয়। যদি একজন মানুষ তার নাম, বর্ণ এবং ধর্ম গোপন করে তাহলে তিক্ততা তৈরি হয়। আমাদের মেয়েরা চুড়ি পরে এবং বর্ষাকালে মেহেদি লাগায়। তিনি চুড়ি বিক্রেতা হিসেবে এসেছিলেন, সেখানে বিভ্রান্তি ছিল এবং তার আইডি দেখায় সত্য বেরিয়ে এসেছে।

Latest articles

Related articles