এই তো তিন চারদিন আগের কথা। এসএসকেম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের বারান্দা দিয়ে মূকাভিনয় করে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বোঝাতে চেয়েছিলেন, তাঁর ভীষণ শরীর খারাপ।
নারদ মামলায় গতকাল বাকি তিন জনের সঙ্গে মদনবাবুকে শর্ত সাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। তারপর এদিন যেন অন্য মুডে মদন। অনেক দিন পর ফিরলেন ফেসবুক লাইভে। কালো কুর্তা, কালো সানগ্লাস পরে পিজির বারান্দায় দাঁড়িয়ে একের পর রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইলেন কামারহাটির বিধায়ক। মদন গেয়ে উঠলেন, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আকাশে আমার মুক্তি…!’ গান শেষ করেই তিনি বলেন, ‘আমি এখন মুক্ত পুরুষ।’ তারপর কখনও গাইলেন ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু’ কিংবা ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই!’ গতকালই মদন মিত্রর ছেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন। বেরিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার একটি টিউমার রয়েছে। তার জন্য ওষুধপত্র চলছে। তবে মেডিক্যাল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবেন বাবাকে কবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে। এসএসকেএম সূত্রে খবর, মদন মিত্রকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলেও তাঁকে বেশ কিছু দিন এখন বাড়িতেই বিশ্রামে থাকতে হবে। কারণ পোস্ট কোভিড কিছু জটিলতা তাঁর শরীরে রয়েছে। সংক্রমণ রয়েছে ফুসফুসেও। এদিন ফেসবুক লাইভে মদন বলেন, ‘আমি তো স্বেচ্ছায় পিজিতে আসিনি। চিকিত্সকদের পরামর্শেই এসেছি। তাঁরা যবে বাড়ি যেতে বলবেন তবেই বাড়ি যাব।’ গত ১৭ মে সকালে নারদ কাণ্ডে চার জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তারপর নিম্ন আদালত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমদের জামিন দিলেও তার বিরুদ্ধে সেদিন রাতেই হাইকোর্টে যায় সিবিআই। উচ্চ আদালত জামিনের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ধৃত চার জনকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। চার জনের মধ্যে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় এই তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। গত সপ্তাহে পার্সোনাল রিস্ক বন্ডে সই করে হাসপাতাল থেকে বাড়ি (গোলপার্ক) ফিরেছিলেন শোভনবাবু। গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন সুব্রতবাবু। হাসপাতালে আপাতত একাই রয়েছেন মদন মিত্র।
মদন গেয়ে উঠলেন, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আকাশে আমার মুক্তি…!’
Popular Categories