এনআরসির বর্ষপূর্তিতে অনিশ্চিত অসমের ১৯ লক্ষের ভাগ্য। এনআরসির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200901-WA0011

এনবিটিভি ডেস্ক: অসমে (Assam) জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি (NRC) প্রকাশের বর্ষপূর্তির ঠিক এক বছর পূর্ণ হল আজ এনআরসির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন ৩কোটি ৩০ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৬১ জন মানুষ। ৩১ অগস্ট, ২০১৯। বহু প্রতীক্ষিত এনআরসির চূড়ান্ত।

তালিকায় নাম বাদ পড়ে ১৯,০৬,৬৫৭ জনের। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) নির্দেশ দেয় ১২০ দিনের মধ্যে রিজেকশন লেটার (Rejection Letter) বা স্পিকিং অর্ডার-সহ নাম বাদ পড়ার আবেদন জানাতে হবে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে। নতুন ২০০ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল গড়া হয়। নতুন করে নিযুক্ত হন ২২১ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল (Foreigners Tribunal) কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও সেই স্পিকিং অর্ডার, রিজেকশন লেটার দিতে পারল না এনআরসি দফতর। এনআরসি কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেব শর্মা (Hitesh Dev Sarma) সেপ্টেম্বর থেকে ফের কাজ শুরু হবে বলে জেলাশাসকদের জানালেও বলেন, সব নির্ভর করছে কোভিড পরিস্থিতির উপরে।এক বছর বিনা কাজে বেতন পাওয়া নবনিযুক্ত ফরেনার্স ট্রাইবুলাল সদস্যদের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত ছিল। কিন্তু মুখ্য সচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ (Kumar Sanjay Krishna) জানান, সেপ্টেম্বরে তাদের চুক্তি শেষ হওয়ার পরে সম্ভবত চুক্তি ফের
নবীকরণ করা হবে। কিন্তু ‘রিজেকশন লেটার’ তৈরিতে এত দেরি কেন হল?এনআরসি দফতর জানায়, প্রতীক হাজেলা (Prateek Hajela) কো-অর্ডিনেটরের কাজ ছেড়ে
মধ্যপ্রদেশে যাওয়ার পরে দীর্ঘদিন কো-অর্ডিনেটর ছিল না দফতর। এই বছর রিজেকশন লেটার তৈরির সময় এনআরসি সফ্টওয়্যারে বড় গরমিল, ত্রুটি চোখে পড়ে। তাই ১৯ লক্ষাধিক রিজেকশন লেটার রি- ভেরিফিকেশন করতে হয়। লেটার ইস্যু করার আগে সার্কল অফিসারেরা নাম বাদ পড়ার কারণগুলি ফের খতিয়ে দেখবেন। তাদের জন্যেও এত দিন এনআরসির কাজকর্ম আটকে ছিল । করােনা ও বন্যার দরুন ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি কর্মীরাও ব্যস্ত ছিলেন। যাদের মামলার জেরে এনআরসি নবীকরণের কাজ শুরু হয়, সেই আসাম পাবলিক ওয়ার্কস (Assam Public Works) অবশ্য দাবি করছে, বর্তমান এনআরসিতে বহু বাংলাদেশির নাম থাকার ঘটনা প্রমাণিত। হাজেলার নেতৃত্বে হওয়া এনআরসি ক্রুটিপূর্ণ। তা অসমের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার দলিল হতে পারে না। এনআরসির ১০০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন না হলে তারা এই এনআরসি মানবে না। আসাম পাবলিক ওয়ার্কস হাজেলা ও এনআরসির কাজের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এনআইএ বা সিবিআইকে দিয়ে করানাের দাবি তুলেছে।

ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে হাজেলার কাজে অনেক গাফিলতি ছিল। ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এনআরসি দফতরের কাজে সিএজও বিস্তর কারচুপি, গরমিল
পেয়েছে। সরকার এটাও জানিয়েছে, যে যতক্ষণ না রেজির জেনারেল অফ ইন্ডিয়া গেজেট নােটিফিকেশন দিয়ে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকাকে মান্যতা দিচ্ছে, ততক্ষণ এনআরসি সরকারি নথি হিসেবে স্বীকৃতিও পাবে না। তার মধ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশােধনীর জেরে হিন্দুদের ক্ষেত্রে ভিত্তিবর্ষ ২০১৪ হয়েছে। এ দিকে
অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা রূপায়ণ কমিটি ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ করে অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে বলেছে।
কংগ্রেসের মতে আগামী বছর নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই এনআরসি ও অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ভূমিপুত্র অসমিয়া ও
জনজাতিদের সংজ্ঞা নির্ধারণের কাজ ঝুলিয়ে রাখতে চাইছে শাসকজোট।
আসুর মতে, এক বছরে অসম সরকার
এনআরসিকে হিমঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে। মানুষ আর এই সরকারকে বিশ্বাস করবে না।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর