নিউজ ডেস্ক : অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারতে উৎপাদিত হওয়ার পরেও তার বেশিরভাগটাই বিদেশে রপ্তানি করে এখন দেশে কৃত্রিম ভ্যাকসিন সংকট তৈরি করেছে মোদি সরকার। ভ্যাকসিনের অভাবে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়া যায়নি এখনও। বেশ কিছু রাজ্য বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আমদানি করছে। অবশেষে মোদি সরকারও বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার দরপত্র আহ্বান করল। কিন্তু ভারতে ভ্যাকসিনের এই সংকটের মাঝেই নিজেদের জন্য নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করেছে পাকিস্তান। কঠোরভাবে ভ্যাকসিনের গুণমান নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষার পরে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে পাকিস্তান। এই ভ্যাকসিনের নাম দেয়া হয়েছে ‘পাকভ্যাক’।
করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি বড় সাফল্য আর্থিকভাবে নানা চ্যালেঞ্জের সন্মুখিন হওয়া পাকিস্তানের জন্য। এই পদক্ষেপটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জন্য অন্যান্য দেশের উপর পাকিস্তানের নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার লক্ষ্যে করা হয়েছে। চীন সরকারের উপহার দেয়া টিকার মাধ্যমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তানে গণহারে টিকাদান প্রকল্পের শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবীণ নাগরিকদের এই টিকা দেয়া হয়। পাকিস্তান এখন ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকাপ্রদান শুরু করেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫০ লাখেরও বেশি নাগরিক টিকা পেয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খাবার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী ডঃ ফয়সাল সুলতান তার অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের এনআইএইচ (জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট) টিম এবং এর নেতৃত্বকে চীনের ক্যানসিনো বায়ো ইনকের সহায়তায় কানসিনো ভ্যাকসিন সফলভাবে পূরণ/সমাপ্ত করার জন্য অভিনন্দন।’ তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিনটি সরবরাহের লাইনে সহায়তা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করে কঠোর অভ্যন্তরীণ মানের নিশ্চয়তা পরীক্ষা করা হয়েছে।’
জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন যে, প্রযুক্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তির কারণে এনআইএইচ প্রতি মাসে এই ভ্যাকসিনের ৩০ লাখ ডোজ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। এনএইচএস ঘোষণা করেছিল যে, চীনের একক ডোজের ক্যানসিনো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ মে মাসের শেষ নাগাদ নাগরিকদের জন্য উপলব্ধ করা হবে। গত শুক্রবার, জাতীয় সংসদকে জানানো হয়েছিল যে পাকিস্তান কোভিড বিরোধী ভ্যাকসিনের স্থানীয় উৎপাদন শুরু করেছে। এনএইচএসের সংসদীয় সচিব নওশীন হামিদ প্রশ্নোত্তরের সময় জানান, ক্যানসিনো ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচটি বর্তমানে এনআইএইচে তৈরি করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে করোনা প্রকোপ বর্তমানে তুলনামূলকভাবে অনেক কম রয়েছে। দেশটিতে কিছুদিন আগে পর্যন্ত কোথাও কোথাও আংশিক লক ডাউন থাকলেও এখন জনজীবন একেবারে স্বাভাবিক। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ইমরান খান সরকারের সাফল্যের প্রশংসা শোনা গিয়েছে হু এর কর্মকর্তাদের মুখে।