মেট্রো রেলে কাজের দক্ষতা দেখালেও নির্যাতনের শিকার রজব আলী, এফ আই আর করলেও পুলিসি নিষ্ক্রয়তার অভিযোগ

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন, কলকাতা: কাজের দক্ষতা দেখালেও মেট্রো রেলের উর্ধ্বতন অফিসার অতনু দের মানসিক ও শারিরীক নির্যাতনের শিকার হয়ে মেট্রো রেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেট্রো -কর্মী মহম্মদ রজব আলী। তার স্ত্রী বৃষ্টি মণ্ডল এনিয়ে দখ্ষিণ কলাতার রিজেন্টপার্ক থানায় এফ আই আর দায়ের করলেও পুলিস ব্যবস্হা নেননি বলে অভিযোগ। তবে মেট্রো-রেল দপ্তর ও রজব আলীর সহকর্মীরা তার চিকিৎসার ব্যাপারে সহযোগিতা করছে। কিন্তু পুলিস কেন এই নির্যাতনের অভিযোগ করলেও অতনু দে -কে গ্রেপ্তার করছে না তা নিয়ে রজবের পরিবার -পরিজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেছন। তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রজব আলী বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বাদুড়িয়া কারিগরপাড়া। এদিকে রিজেন্টপার্ক থানায রজব আলীর স্ত্রী বৃষ্টি মণ্ডল,এফ আই আর-এর বয়ানে যে অভিযোগ করেছেন , তা হল,
নিম্নরূপ:
স্যার,
আমি বৃষ্টি মন্ডল, মোঃ রজব আলী মোল্লার স্ত্রী, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া থানার অন্তর্গত বাদুড়িয়ার কারিগর পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা,
মহাশয় ,আমার স্বামী কলকাতা মেট্রো রেলওয়ের একজন পার্মানেন্ট ট্রাক-মেইন্টেনেন্স স্টাফ, গত কিছুদিন ধরে আমার স্বামীর উপরতলার অফিসার SSE/P.WAY/SOUTH ইনচার্জ অহেতুক নির্যাতন ও আমার শাশুড়ি “মা”কে নিয়ে বাজে মন্তব্য শুরু করেন,
ঘটনার মূল বিষয় এই যে, দীর্ঘদিন আমার স্বামীর সেকশন সুপারভাইজার অতনু দে ,তিনি স্টাফদের উপর অত্যাচার করেন, ইনজুরি হয়ে গেলে কোনোরকম কর্ণপাত করেন না, ইনজুরি অবস্থায় ভারী কাজ দেন, নাইট ডিউটিতে তাকে কখনো পাওয়া যায় না। স্টাফদের অভিযোগ জানানোর জন্য, কিছু বলতে গেলে স্টাফদের সাথে বাজে ভাষা ব্যবহার করেন, এই বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ১৩ জন স্টাফ মিলে লিখিত অভিযোগ জমা করেন।
চিঠি জমা করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জানতে পারেন এবং প্রত্যেককে ফোন করে চিঠি উইথ-ড্র করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন, বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন ভাবে পানিশমেন্ট দেওয়া, ছুটি ক্যান্সেল করার ভয় দেখিয়ে উইথড্রো চিঠিতে সই করিয়ে নেয় ,একদিন পর আমার স্বামীর সমস্ত প্রবলেম সমাধান হবে এই আশা দিয়ে নতুন চিঠিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেন ।
এই ঘটনার কয়েকদিন পর থেকেই আমার স্বামীর উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার ক্রমাগত বাড়াতে থাকে। আমার শাশুড়ি-মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ তার চেকআপের জন্য একদিন ছুটির আবেদন করলে, সুপারভাইজার ছুটি ক্যান্সেল করে দেন এবং আমার স্বামীকে বাজে মন্তব্য করে বলেন ‘ তু্ই যেখানে খুশি যেতে পারিস’এমন কেনো করছেন জানতে চাইলে ফোনে SSE ইনচার্জ শ্রী অতুনু দে মহাশয় গালি গালাজ করেন ও অন্য এক স্টাফ কে বলে আমার স্বামীর রেস্ট রুম থেকে সমস্ত জিনিস পত্র ফেলে দিতে, যথারীতি পরের দিন সকালে গিয়ে আমার স্বামী দেখেন জিনিস পত্র বাইরে পড়ে আছে। এমত অবস্থায় অতনু দে সাহেব কে বারবার ফোন করে রিকোয়েস্ট করেন আমার স্বামী জিনিসগুলো রুমে রাখারজন্য , কিন্তু তিনি কোনো মতে রাজি হননি । আমার স্বামী রোজা থাকার জন্য গত ২২-০৩-২০২৪ ইফতারের পরে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬:৩৫ নাগাদ জামা-কাপড় সহ অনন্যা জিনিসগুলো আনতে যায়, গিয়ে দেখে জিনিস গুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে, জিনিসগুলো চাইতে গেলে গালিগালাজ শুরু করে দেন এবং আমার স্বামীর উপর চড়াও হয়ে চড়-ঘুসি মারেন, এবং দরজার ওপর জোর পূর্বক ঠেলে দিলে দরজার লোহার হ্যান্ডেল বুকে লাগে এবং দরজার চৌকাঠে প্রচন্ড মাথায় আঘাত লাগে ও হাতে আঘাত লেগে রক্ত বার হতে থাকে, আমার স্বামী প্রচন্ড আহত হয়ে অন-ডিউটি RPF এর কাছে বিষয়টা বলেন , তিনি আগে মেডিক্যাল ট্রিটম্যানের পরামর্শ দেন, সেইমতো পাশেই মেট্রো রেলের TSM হাসপাতালে দেখাতে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভর্তি করে নেন, আমার স্বামী এখনো ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আমি রিজেন্ট পার্ক থানাতে FIR লেখাতে গেলে থানা থেকে এক মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর হাসপাতালে এসে লিখিত অভিযোগ সহ ভিডিও করে সমস্ত বর্ণনা নিয়ে যান, কিন্তু FIR না করে বিষয়টা পেন্ডিং রেখে দেন, ক্রমা-গত ঘটনার রেকর্ডিং সহ কিছু ফটো থানার Lady S.I কে পাঠানো হয় ঘটনা তদন্ত করে গত 27/03/24 তারিখ আমাকে FIR কপি দেন, এতকিছুর পরেও অপরাধী তাঁর ডিউটিতে বহাল আছেন এবং আমার স্বামী এখনো হসপিটালে চিকিৎসাধীন।

এই বাংলায় সংখ্যালঘু মুসলিম হওয়ায় কি আমার অপরাধ? আমার খুব ভয় করছে আনিসের মতো আমার স্বামীকে যেনো খুন হতে না হয় আপনার কাছে বিনীত নিবেদন আমি যাতে সঠিক বিচার পেতে পারি তাহার উপযুক্ত ব্যবস্থা করে বাধিত করবেন।

বিনীত নিবেদক –
বৃষ্টি মন্ডল।
স্বামী- মোঃ রজব আলি মোল্লা
গ্রাম +পোস্ট +থানা-বাদুড়িয়া
জেলা-উত্তর ২৪ পরগনা, পিন-৭৪৩৪০১.

Latest articles

Related articles