থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীকে নিজের রক্ত দিয়ে মানবতার নজির কলকাতা পুলিসের সিভিক ভলান্টিয়ার মহম্মদ নিয়াজুদ্দিনের

NBTV ONLINE DESK

NBTV ONLINE DESK

IMG-20200823-WA0029

ফের মানবতার নজির কলকাতা পুলিসের,
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ১১ বছরের ছেলে সুপ্রিয়র জন্য এক বোতল রক্ত আনতে হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থেকে কলকাতার পদ্মপুকুরে একটি ব্লাড ব্যাঙ্কে আসছিলেন বাবা শুভেন্দু ভুক্ত।কুড়ি দিন অন্তর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন হয় সুপ্রিয়র। শুক্রবার ছিল সুপ্রিয়র ব্লাড ট্রান্সফিউশনের দিন।

করোনা পরিস্থিতির জন্য স্বেচ্ছা-রক্তদাতা না পেয়ে শুভেন্দু ঠিক করেছিলেন, ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে নিজের রক্ত দিয়ে বিনিময়ে ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত আনবেন। লকডাউনের মধ্যে বেরিয়ে তাড়াহুড়োয় হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখেই দুর্ঘটনায় পড়েন। রাস্তায় বাইকের চাকা কোনও ভাবে পিছলে যায়। কেটে-ছড়ে যায় শরীরের নানা জায়গায়। তাতেই পোশাকে রক্তের দাগ লাগে। কিন্তু অসুস্থ সন্তানের জন্য রক্ত চাই। তাই চোটের পরোয়া না করে সেই অবস্থাতেই বাইক তুলে ফের রওনা দেন শুভেন্দু বাবু। নাকা চেকিংয়ে তাঁকে আটকান কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারেরা।

কলকাতা পুলিশের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে বলা হয় ” শুক্রবার, ২১ আগস্টের ঘটনা। তখন সকাল সাড়ে এগারোটা হবে। লকডাউনে জনশূন্য হাওড়া ব্রিজ। কলকাতার দিকে পুলিশের নাকা চেকিংয়ে থামানো হল হাওড়ার দিক থেকে আসা একটি বাইক। আরোহীর গায়ে রক্তের দাগ। স্বাভাবিকভাবেই কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারেরা বাইক আরোহীর কাছে জানতে চাইলেন কী ঘটেছে? কেন শরীরে, জামা-কাপড়ে রক্তের দাগ?”

সব শোনার পরে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের সিভিক ভলান্টিয়ার মহম্মদ নিয়াজুদ্দিন এগিয়ে এসে আহত শুভেন্দুবাবুকে আশ্বস্ত করে বলেন, এই শরীর নিয়ে তাঁর রক্ত দেওয়ার দরকার নেই, তার বদলে তিনিই শুভেন্দুবাবুর সন্তানের জন্য রক্ত দেবেন।
নিয়াজুদ্দিনের এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই নাকা চেকিংয়ে উপস্থিত অফিসারেরা তাঁকে শুভেন্দু বাবুর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন। পদ্মপুকুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে ‘এ পজিটিভ’ রক্ত দেন মহম্মদ নিয়াজুদ্দিন। পরিবর্তে ছেলের জন্য ‘ও পজিটিভ’ রক্ত নিয়ে হাওড়ার হাসপাতালে ফেরেন শুভেন্দু। রক্ত পায় ১১ বছরের সুপ্রিয়। সাধ্যমত সত্যিই পাশে থাকে কলকাতা পুলিশ আরেকবার সেটা যেন প্রমাণিত হলে।

Facebook Comments Box

সম্পর্কিত পঠিত খবর

সর্বশেষ খবর