ইউরোপের ফুটবল আঙিনায় বিদ্রেোহের রেশ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বদলে কী করে সুপার লিগকে অন্যতম সেরা লিগ করা যায়, সেই নিয়ে হেভিওয়েট ক্লাবের কর্তারা একজোট। তাঁরা মনে করছেন, এটাই হতে চলেছে আগামী দিনের ফুটবলের দিশা। একটা সময় আইপিএলের রমরমা কমাতে আইএসএল শুরু করা হয়। সেই দলে নাম লেখান চিত্রতারকা মিঠুন চক্রবর্তী, কপিলদেবের মতো তারকারা। তাঁরা দলও কিনেছিলেন, কেউ হন বিপননী দূতও। কিন্তু বিসিসিআই-র অনুমোদন না মেলায় সেই লিগ আর টেকেনি। ইউরোপের সুপার লিগ ঘিরেও এমনই বিতর্ক, ফিফা কিংবা উয়েফা এই লিগকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে না। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিবাদ। ইংল্যান্ডের শীর্ষ ছয়, স্পেনের তিন ও ইতালির তিন ক্লাবকে নিয়ে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ (ইএসএল) আয়োজনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত। যে কোনও দিন প্রকাশ করা হবে বিদ্রোহী এই লিগের সূচি ও অন্যান্য বিস্তারিত। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের সিংহভাগের দাবি, এই টুর্নামেন্টের ফলে দুর্দশা নেমে আসবে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে। উল্লেখ্য, ইউরোপিয়ান সুপার লিগের ভাবনায় থাকা ক্লাবগুলি হল, এসি মিলান, আর্সেনাল, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, চেলসি, বার্সেলোনা, ইন্টার, জুভেন্টাস, লিভারপুল, ম্যান সিটি, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ও টটেনহ্যাম। ইউরোপিয়ান সুপার লিগের চেয়ারম্যান রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের মতে, ফুটবলকে বাঁচানোর জন্যই তারা এই নতুন টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন। একটা সময় যে ফিফাও তাদের দাবি মেনে নেবে, সেই নিয়েও আশায় ওই প্রবীন কর্তা। স্পেনের সংবাদমাধ্যম এল চিরিংগু-ইতোকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে পেরেজ জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ১৫টি ক্লাবের নাম তারা ঠিক করে ফেলেছেন। যার মধ্যে ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। বাকি তিনটি ক্লাব শিগগিরই যোগ দেবে এ আয়োজনে। এর বাইরে আরও ৫টি ক্লাব নিয়ে মোট ২০ দলের টুর্নামেন্ট হবে ইএসএল। এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের উদ্দেশ্য যে মহত্, তা জানিয়ে পেরেজ বলেছেন, ”আমরা মর্যাদাপূর্ণ ক্লাবগুলোকে বাঁচানোর জন্য এটি করছি। তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখার সব সুযোগ শেষ হওয়ার আগেই এটি আমাদের করতে হবে। বড় ও ছোট ক্লাবের মধ্যে যাতে ভারসাম্য থাকে, সেদিকেই আমরা নজর দিয়েছি।” তিনি আরও যোগ করেন, ”এই টুর্নামেন্ট সবাইকে বাঁচিয়ে রাখবে। ফুটবল এখন দিশেহারা অবস্থার মধ্যে চলছে, বড় ক্লাব আরও বড় হচ্ছে, ছোট ক্লাব শেষ হয়ে যাচ্ছে, এতে এমনটা হবে না।” ফুটবলের ভবিষ্যতের জন্য সুপার লিগের লড়াই, এমনই জানালেন পেরেজ। তাঁর এই বিষয়ে মন্তব্য, ”বিশ্বে প্রায় ৪০০ কোটি ফুটবল দর্শক রয়েছে, তাঁদের আবারও আগ্রহ ফেরাতে হবে। তাঁদের ইচ্ছেপূরণ করতে হবে আমাদের, তাই এই লিগের ভাবনা।” এদিকে গত রবিবার উয়েফা ও ফিফাসহ ছয়টি ফেডারেশন মিলে যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে যে, ইউরোপিয়ান সুপার লিগে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়রা নিজ নিজ জাতীয় দলের হয়েও খেলতে পারবে না। এই নিয়ে রিয়াল শীর্ষ কর্তা বলেন, ”এটা ভয় দেখানোর খেলা, জাতীয় দলে খেলা এতে আটকাবে না।”
”বিশ্বে প্রায় ৪০০ কোটি ফুটবল দর্শক রয়েছে, তাঁদের আবারও আগ্রহ ফেরাতে হবে”-রিয়াল প্রেসিডেন্ট পেরেজ
Related articles