অক্ষত এটিএম। কিন্তু উধাও মেশিনের ভিতরে থাকা লক্ষ লক্ষ টাকা। কাশীপুর, নিউ মার্কেট এবং যাদবপুরের পর এবার বউবাজারের একটি এটিএম থেকে প্রায় একই কায়দায় খোয়া গেল ২৫ লক্ষ টাকারও বেশি। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বউবাজার থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বউবাজারের এটিএম থেকে টাকা চুরির ঘটনাতেও জড়িয়ে রয়েছে একই প্রতারক চক্র। এটিএম জালিয়াতির এই ঘটনার পিছনে ফরিদাবাদের একটি গ্যাং রয়েছে বলেই প্রাথমিক অনুমান পুুলিশের। কলকাতার জালিয়াতদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই তারা এই প্রতারণা চালাচ্ছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
গত ১৪ থেকে ২২ মে-র মধ্যে কাশীপুরের একটি এটিএম থেকে ৭ লক্ষ টাকা, যাদবপুরের একটি এটিএম থেকে ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং নিউ মার্কেটের একটি এটিএম থেকে ১৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খোয়া যায়। এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর পরই সামনে এল বউবাজারের এটিএম থেকে টাকা চুরি যাওয়ার খবর। জানা গিয়েছে, বউবাজারের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকেও গত ১৪ মে ২৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে। গত ২৯ মে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় ব্যাঙ্কের তরফে। তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখেছে, একসঙ্গে তিন প্রতারক ওই এটিএম-এ ঢুকেছিল। তাদের প্রত্যেকের মুখেই মাস্ক ছিল।
যেভাবে অত্যাধুনিক ডিভাইসের সাহায্যে আগের তিনটি এটিএম থেকে টাকা বের করে নেওয়া হয়েছিল, এক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এক থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে অপারেশন চালানো হয়েছে। কাশীপুরে মোট ৩৫টি ট্রানজ্যাকশন চালায় প্রতারকরা। নিউ মার্কেটের এটিএম-এ ৯০টি লেনদেন করা হয় আর বউবাজারে ১৩ থেকে ১৪ বারের ট্রানজ্যাকশন করে এই বিপুল টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এটিএম-গুলির সিসিটিভি ফুটেজ। আশেপাশের কারও যাতে সন্দেহ না হয়, তা নিশ্চিত করতে টাকা বের করে নেওয়ার আগে বার বার এটিএম-র বাইরে বেরিয়ে আসছিল প্রতারকরা।
ফরিদাবাদেও একই কায়দায় এটিএম প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিল। সেই কারণেই পুলিশের অনুমান, কলকাতার এই এটিএম প্রতারণা চক্রের সঙ্গেও ফরিদাবাদের ওই গ্যাং-টিই যুক্ত রয়েছে। একই সঙ্গে তদন্তকারীদের সন্দেহ, যে ব্যাঙ্কগুলির এটিএম-এ চুরি ঘটনা ঘটছে তাদের বা এটিএম রক্ষণাবেক্ষণে যুক্ত সংস্থাগুলির এক বা একাধিক কর্মীও এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। সেই কারণেই গত পাঁচ বছরে এই ব্যাঙ্কগুলি এবং রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলিরতে কারা চাকরিতে ঢুকেছেন এবং ছেড়েছেন, সেই তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ফরিদাবাদের ওই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত এক অভিযুক্তের সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া এক প্রতারকের মুখের মিলও পাওয়া গিয়েছে।