
কলকাতা: দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে হাসিমুখে উপস্থিতি নিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বিতর্কের কেন্দ্রে। তাঁর এই অবস্থানকে ঘিরে দলীয় অন্দরে উত্তাপ ছড়িয়েছে। একাংশ নেতা প্রকাশ্যে তাঁকে “নির্লজ্জ” থেকে “ভোগী” আখ্যা দেওয়াসহ ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আক্রমণ বারংবার। তবে এবার এই ইস্যুতে সংযত হওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য বিজেপি।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির সব স্তরের নেতাদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়েছে: দিলীপ ঘোষ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে হলে সংযত ভাষা ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব হলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। অন্যথায়, কেবল রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বা মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যই মন্তব্য করবেন। গত শনিবার সৌমিত্র খাঁসহ কিছু নেতার সমালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “যে যা ভাবছে, তা লিখতে পারবে না। দল যা করতে বলবে, তাই করা হবে। ২০২৬ সালে তৃণমূলকে সরিয়ে বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট বা জয় জগন্নাথের নাচ দেখে কেউ ভাবলে ভুল হবে। পরিস্থিতি বদলাবে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”

গত সপ্তাহে দিলীপ ঘোষ সস্ত্রীক দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে যোগ দেন। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর হাসিমুখে আলাপচারিতা অভ্যন্তরীণ বিতর্কের সূত্রপাত করে। একাংশ নেতা এটিকে “দলীয় স্বার্থের বিরোধী” বলে অভিহিত করে সরব হন। তবে দিলীপ ঘোষ এখনও বিষয়টিতে প্রতিক্রিয়া জানাননি।

দলীয় নির্দেশ অনুযায়ী, এখন থেকে দিলীপ ঘোষ সম্পর্কিত কোনো বিতর্কে সাধারণ নেতাদের বক্তব্যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ঐক্য বজায় রেখে ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জোর দিচ্ছে বিজেপি। বিশ্লেষকদের মতে, দলের এই সিদ্ধান্ত অভ্যন্তরীণ বিভেদ সামাল দিতে কৌশলগত পদক্ষেপ।

বিজেপির “সংযত হওয়ার” বার্তা সত্ত্বেও, দিলীপ ঘোষের ভূমিকা ও দলীয় নীতির সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান্তর যতই থাকুক, আগামী দিনে এই ইস্যুটি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে বলেই মত রাজনৈতীক পর্যবেক্ষকদের।