নিউজ ডেস্ক : মুসলিম পরিচয় যে ধীরে ধীরে গেরুয়া শিবিরের কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতাদের দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলিতে সমাজকর্মী, লেখক, সাহিত্যিক এবং বুদ্ধিজীবীদের কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা আবার প্রমাণিত হল। না এবার কোন গেরুয়া শিবিরের কর্মী না নেতার মুখ থেকে নয় এবার মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা গেল ভারতীয় সংবিধানের রক্ষার শপথ গ্রহণ করা এক পুলিশ অফিসারের মুখে। তিনি ইন্দোরের এসপি বিজয় খাত্রি। তিনি প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, “মুনাওয়ার ফারুকী মুসলিম বলে এত আলোচনা হচ্ছে এ ব্যাপারে। বাকি তিনজন অমুসলিম বলে তাদের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। যদি তাকে ছেড়ে দিয়ে বাকি তিনজনকে গ্রেফতার রাখা হয় তাহলে কেউ কোনো প্রশ্ন করবেনা।” পুলিশের এসপির মুখে এমন মন্তব্য শুনে হতভম্ব সবাই। উল্লেখ্য গুজরাটের জুনাগর অঞ্চলের বাসিন্দা মুনাওয়ার ফারুকী ভারতবর্ষের নামজাদা কৌতুক শিল্পী কিন্তু বাকিরা ততটা পরিচিত নয়।
ফারুকী কোন হিন্দু দেব-দেবী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেননি, এমনকি সেদিন ইন্দরে তার অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী হিন্দু রক্ষক সংস্থার কর্মী একলব্য গৌড়। তার ভিত্তিতে পুলিশ ১লা জানুয়ারি তাকে অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে তাকে গ্রেফতার করে ইন্দোরের এক ক্যাফে থেকে। কিন্তু এই গেরুয়া শিবিরের অতি ঘনিষ্ঠ এই পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, ” সে হিন্দু দেবদেবীর বিরুদ্ধে কোনো কৌতুক করেনি, কিন্তু তাতে কি হয়েছে। সে ইতিপূর্বে এমন মন্তব্য করেছে এবং সেদিনও এমনি করত যদি আমরা বাধা না দিতাম।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে পুলিশের উর্দিতে গেরুয়াবাদী এসপি সভা শুরুর পূর্বে কিভাবে জানলেন যে তিনি ওই সভাতে কি মন্তব্য করতে যাচ্ছেন। এর উত্তর ও দিয়েছেন চরম নির্লজ্জ এই অফিসার। তিনি বলেন, একলব্য গৌড় তাদের রিহার্সালে শুনেছিলেন, ফারুকী হিন্দু দেবতা রাম এবং শিব কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করছেন। কিন্তু ইতিপূর্বে একলব্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছিলেন তিনি ওই অনুষ্ঠানে টিকিট কেটে প্রবেশ করে দেখেছিলেন ফারুকী হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের ভাবাবেগে আঘাত দেয়ার মত কৌতুক করছেন। একলব্য নামক এই গেরুয়া কর্মীর ভন্ডামি এখন প্রকাশ্যে কিন্তু পুলিশ কিভাবে তার সাথে একই সুরে কথা বলছে সেটা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। শুধু তার সুরে কথাই বলে ক্ষান্ত হয়নি ইন্দোরের পুলিশ বরং তার বিরুদ্ধে কোন অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে মুনাওয়ার ফারুকির বন্ধু সাদাত খানকেও। মধ্যপ্রদেশের পুলিশ শুধুমাত্র গেরুয়া নেতাদের রক্ষার জন্যই কি নিযুক্ত রয়েছে প্রশ্ন বিরোধী বুদ্ধিজীবি মহল এর।