জাপানে এক দশকে দ্বিগুণ হল মুসলিমদের সংখ্যা, সূর্যোদয়ের দেশে উদিত হচ্ছে ইসলামের নয়া সূর্য

সাইফুল্লা লস্কর : পৃথিবীর সব থেকে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা। ২০৭০ এরমধ্যে ইসলাম হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় গোষ্ঠীর জিবন পন্থা। উত্তরের রাশিয়া, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে থেকে দক্ষিণে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউগিনির মতো দেশে, পশ্চিমে আমেরিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কানাডার মত দেশ থেকে পূর্বে জাপান দক্ষিণ কোরিয়া চীনের মত দেশ। সর্বত্রই মানুষ দলে দলে আশ্রয় নিচ্ছে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। এরই অংশ হিসাবে পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপানে দেখা গেল ইসলাম অগ্রগতির নয়া অধ্যায়। জাপানে গত এক দশকে মুসলিমদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তানাদা হেরোফুমি। সাম্প্রতিক সময়ে পাওয়া এক তথ্যে জানা গেছে জাপানে ২০১০ সালে মুসলিমের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার, সেই সংখ্যা ২০১৯ সালে গিয়ে পৌঁছেছে ২ লক্ষ ৩০ হাজারে। অর্থাৎ ইসলামের অনুসারী সংখ্যা গত এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এর মধ্যে ৫০,০০০ ভিন্ন ধর্মের অনুসারী জাপানি নাগরিক ইসলামকে আলিঙ্গন করেছেন নিজেদের ভবিষ্যত জীবণ পন্থা হিসেবে।

মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জাপানে বৃদ্ধি পেয়েছে মসজিদ, ইবাদাতগাহ এবং হালাল রেস্টুরেন্ট এর সংখ্যাও। জাপানের এশিয়া-প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর তাহির আব্বাস বলেছেন জাপানে বর্তমানে ১১০ টি মসজিদ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশকিছু ভ্রাম্যমাণ মসজিদ। রয়েছে বহু সংখ্যক হালাল রেস্টুরেন্ট।

 

জাপানে ইসলামের সূচনা হয় ১৯২০ সালের রাশিয়া থেকে তুর্কি জনগোষ্ঠীর কয়েকশো মুসলিমের আগমনের মাধ্যমে। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত জাপানে মুসলমানের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। মুসলিমদের সংখ্যায় ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল হাজার ১৯৮০ সালে যখন ইরান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে বহু শরণার্থীরা জাপানে পাড়ি জমান। তারপর থেকেই জাপানে ইসলামের প্রসার বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তরোত্তর।

তবে জাপানের মুসলিমদের সংখ্যার এই ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেলেও তাদের মূল সমস্যা কবরস্থানের অভাব। গোরস্থান নির্মাণের জন্য উপযুক্ত জমির মঞ্জুরি সরকারিভাবে না পাওয়ায় জাপানের মুসলমানদের প্রায় ৯৯ শতাংশ দাহ করা হয়, যা ইসলামের মৌলিক বিধানের পরিপন্থী। ২০১০ সাল থেকে জাপানের মুসলিমদের সংগঠন বি এম এ একটি গোরস্থান নির্মাণের জন্য প্রায় ৬,০০০০০ ডলার সংগ্রহ করে। কিন্তু স্থানীয়দের পানীয় জলের সরবরাহের ব্যাপারে উদ্বেগের প্রকাশ করায় সেই গোরস্থান মঞ্জুরি লাভ করেনি। “এই সব বাধা সত্বেও আমরা জাপানে অনেক সুখে আছি এবং এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। জাপানকে আমরা নিজেদের বাসস্থান হিসেবে নির্বাচন করেছি জানালেন প্রফেসর তাহির আব্বাস খান। জাপানের ভিন ধর্মের বহু মানুষের এই ইসলামমুখী হওয়ার প্রবণতা সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে ইসলামের নয়া সূর্য উদয়ের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে।

Latest articles

Related articles