Thursday, June 12, 2025
29 C
Kolkata

করোনা পরিস্থিতি, শিলাবৃষ্টির পরেই ঘূর্ণিঝড় যশের চোখরাঙানি, আতঙ্কে আগাম ধান এবং আম ঘরে তুলে নিচ্ছে মালদার চাষীরা, সব রকম ভাবে প্রস্তুত জেলা প্রশাসন

গোলাম হাবিব, মালদাঃ একেই করোনার জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। চলছে কার্যত লকডাউন। একদিকে যেমন করোনার ভয়, অন্যদিকে সাধারণ মধ্যবিত্ত সমাজের আর্থিক দুরবস্থা। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। তারই মাঝে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় যশ। গতবার আমফানের ক্ষতিই সম্পূর্ণভাবে পূরণ হয়নি। তার মধ্যেই আবার যশের ভ্রুকুটি। রাজ্য জুড়ে আগাম সর্তকতা নিয়েছে প্রশাসন। দুশ্চিন্তায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। এরই মাঝে মাথায় হাত মালদা জেলার চাষীদের। কিছুদিন আগেই শিলা বৃষ্টি হয় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, রতুয়া, মানিকচক সহ বিভিন্ন এলাকায়। তখন ধান,পাট এবং আমের ক্ষতি হয়। আর তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের আবাস পেতে আতঙ্কিত চাষীরা। তাই মাঠে যতটুকু ধান রয়েছে বা গাছে আম তা আগাম তারা ঘরে তুলে নিচ্ছে। আম হয়তো সম্পূর্ণভাবে পাকেও নি, ধানের ফলনও সম্পুর্ণ হয়নি কিন্তু যদি ঘূর্ণিঝড়ে সব শেষ হয়ে যায় তাই আগাম সতর্ক চাষিরা। লোকসান হলেও ঘরে তুলে নিচ্ছে ফসল। রাজ্যের সর্বত্রই আগাম ধান কাটার চিত্র দেখা যাচ্ছে। মালদাও তার ব্যতিক্রম নয়। এদিকে মালদার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হল আম ব্যবসা। শিলাবৃষ্টিতে আমের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। করোনার কারণে বাজারও খারাপ। তারপর আবার ঘূর্ণিঝড়। লোকসানের মুখে তাই চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে আমচাষীদের। অবশ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সব রকম ভাবে প্রস্তুত তারা। যে কোনো রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে। তার জন্য পুলিশ, ব্লক ,স্বাস্থ্য দপ্তর, দমকল বিভাগ সকলেই প্রস্তুত।

অমিতা দাস নামে ধানচাষী বলেন,” খবরে ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনছি। তাই আগাম ধান কেটে ঘরে তুলে নিচ্ছি। একেই শিলাবৃষ্টিতে অর্ধেক ধান নষ্ট হয়েছে। তাই যতটুকু আছে, সবাই ভয়ে ধান কেটে নিচ্ছে।

নগেন দাস নামে এক আম চাষি বলেন,” ঝড়ের খবর পেয়ে আম পেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ আম এখনো সম্পূর্ণভাবে পাকেনি। কিন্তু কিছু করার নেই। শিলাবৃষ্টিতে আমের ক্ষতি হয়েছে। আবার যদি ঝড়ে আম নষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে কাঁচা আম ই ঘরে তুলতে হচ্ছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর ২ব্লক পঞ্চায়েতের একাউন্টসের অডিট অফিসার দেবমাল্য দাসকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,” চাষিরা সতর্ক হয়ে ধান বা আম কেটে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমরা প্রশাসনিক ভাবে প্রস্তুত। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর প্রস্তুত। ব্লক, স্বাস্থ্য পুলিশ এবং দমকলের মধ্যে সমন্বয় থাকছে। প্রয়োজন অনুযায়ী মোকাবিলা করা হবে।

গতবারও করোনার মধ্যে আমফান এসে বিপর্যস্ত করেছিল জনজীবন। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল বহু মানুষকে। এবার করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়ানক। তার মাঝে যশের ভ্রুকুটি। সরকারের উচিত সঠিকভাবে বিপর্যয় মোকাবিলা করা। এই মুহূর্তে যতটা ক্ষতির হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচানো যায় সেদিকে প্রশাসনের নজর রাখা উচিত। সাথে ঝড় পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সঠিক ভাবে সাহায্য পৌছে দেওয়া নিয়েও তৎপর থাকা উচিত প্রশাসনের।

Hot this week

দিল্লির দ্বারকায় বহুতলে ভয়াবহ আগুন থেকে বাঁচতে ৯ তলা থেকে লাফ দিয়ে একই পরিবারের তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু

নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার সকালে দিল্লির দ্বারকা সেক্টর-১৩ এর শাপাথ সোসাইটিতে...

রাজস্থানের চুরুতে মহিলা কনস্টেবলের উপর ডিএসপি সুনীল ঝাঝড়িয়া হাত তোলার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত শুরু

রাজস্থানের চুরুতে একটি ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। ভিডিওতে...

Topics

Related Articles

Popular Categories