জৈদুল সেখ, কান্দি: একমাত্র টালির বাড়িতে কোনো রকমে মাথা গুঁজে থাকতো রহিমা বিবির পরিবার। বৃষ্টির ফলে সেই টালির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ফলে বর্তমানে রৌদ্র, ঝড়, বৃষ্টির মধ্যেও দিন কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। এমনই অসহায় ভাবে দিন কাটছে মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত কান্দী থানার মহলন্দী দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জীবন্তি হটাৎপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বিবির পরিবারের।
উল্লেখ্য, রহিমা বিবির স্বামী হাবিব সেখ গত আট বছর আগে মারা গেছে। দুই ছেলে রয়েছে তাঁর। বড়ো ছেলে দীনু সেখ এবং ছোট্ট ছেলে সানুয়ার সেখ ওরফে গদা । কিন্তু দুই ছেলেই শারীরিক ভাবে অক্ষম। তাই কোনো কাজই করতে পারে না তারা। কোনও রকমে চেয়ে চিন্তে দিন চলে।
মা রহিমা বিবি জানান,” আমার দুই ছেলে, এক মেয়ে সকলেই প্রতিবন্ধী, কোনো কাজ করতে পারে না। স্বামী মারা যাওয়ার পর ধার দেনা করে কোনওরকমে সংসার চালাতে হয়। হ্যান্ডিক্যাপ হওয়া সত্ত্বেও সরকারি কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বলেও কোনো লাভ হয়নি। ছেলের থাকার একমাত্র টালির বাড়িটি ভেঙে পড়েছে। খুব অসুবিধার মধ্যে আছি, টাকা পয়সা কিছু নেই। বাড়ি তৈরি তো দূরের কথা ছেলের স্ত্রী, পুত্র নিয়ে সংসার চালানো মুসকিল হয়ে পড়েছে। ” এভাবেই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটছে পরিবারের।
ছেলে সানুয়ার সেখ লকডাউন থেকেই সমস্যায় পড়েছে। বর্তমানে স্ত্রী- সহ দুই সন্তানকে খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল টাঙিয়ে দিন কাটাচ্ছে। গদার স্ত্রীও বোবা একটা ভাঙা ভ্যানে করে স্বামীকে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে দু মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতেনক। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। সানুয়ার সেখ বর্তমানে অসুস্থ। তাই চলাফেরা করতে পারে পারে না। চোখের জলে ছল ছল করে বলতে চাইছে, ইকটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। বর্তমানে এদের সংসারে পাঁচ জন্য সদস্য সকলেই কর্মহীন। হাড়িতে কখনো কখনো জল ফুটলেও ভাত ফোটেনা! এখন দেখার বিষয় সরকারের পক্ষ থেকে এই অসহায় পরিবারের পাশে সাহায্যের হাত বাড়াবে নাকি খোলা আকাশের নিচে জীবন কাটাবে?