এনবিটিভি ডেস্কঃ করোনা আবহের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় গত ২১ নভেম্বর থেকে রাজ্যে চালু হয়েছে নবম- দ্বাদশ শ্রেণীর পঠন পাঠন। দীর্ঘ লকডাউনে একটা অংশের ছাত্র ছাত্রীদের অনলাইনেই ভরসা ছিল পড়াশোনার। ফোনের যোগাযোগে প্রতিমাসে মিড ডে মিল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নিয়ে গেছে অভিভাবকরা। নভেম্বর মাসে বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হচ্ছে ফাইনাল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক। বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের ও নবম শ্রেণীর উপরের ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে বসিরহাট মহাকুমার ব্রহ্মানন্দ বিদ্যাভবন হাইস্কুলের শিক্ষকরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে পৌঁছান।
প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান, সহ শিক্ষক আলি আকবর, শমীক দাস, পার্শ্ব শিক্ষক মিহির বিশ্বাসরা ঘোড়ারসের আদিবাসী পাড়া থেকে দেবরাজপুর জাফরপুর প্রভৃতি গ্রামে গিয়ে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছাত্র ছাত্রীদের হাতে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক তুলে দেন এবং নবম শ্রেণীর উপরের ছাত্রদের পুনরায় সরকারি নিয়ম মেনে স্কুলে আসার আবেদন জানান।
শিক্ষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা এক অভিভাবকের বক্তব্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলে মেয়েরা দীর্ঘদিন পড়াশোনার বাইরে, নতুন করে পড়াশোনার মধ্যে ফিরিয়ে আনা কাজটা খুব সহজ নয়। শিক্ষকদের সঙ্গে আমরা অভিভাবকরা সচেতন হলেই এই কাজ সহজ হবে। শিক্ষকরা যেভাবে ছাত্র ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মতো করে বুঝিয়ে সুঝিয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
শিক্ষক আলি আকবর বলেন লকডাউনের এই দীর্ঘ সময়ে ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার মাধ্যম হলো হোয়াটসঅ্যাপ ও ফোন কলের যোগাযোগ। আমাদের বিদ্যালয়ের একটা বড়ো অংশের অভিভাবকদের দারিদ্রতার কারণে অনলাইনে ছেলেমেয়েদের ক্লাসের জন্য অ্যানড্রয়েড ফোন রাখা তো অনেক দূরের কথা মাসে মাসে রিচার্জ করে ফোন চালু রাখাটাই অনেক কষ্টসাধ্য। সেই সমস্ত ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে এবারের নভেম্বর মাসের ফাইনাল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পৌঁছে দিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের উদ্যোগে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা ছাত্র ছাত্রীদের তালিকা তৈরি করে গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে আমরা গিয়েছি। শিক্ষকদের কাছে পেয়ে নবম শ্রেণীর উপরের অনেক ছাত্র ছাত্রীই পরবর্তী দিন থেকে স্কুলে আসার অঙ্গীকার করেছেন। আশাকরছি এই উদ্যোগের ফলে একটা অংশের ছাত্র ছাত্রী ড্রপ আউট হওয়া থেকে আটকাবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আরও বেশকিছু ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে যাওয়া হবে।