সুরজিৎ দাস, নদীয়া, এনবিটিভি: রামায়ণ রচনা করেছিলেন কবি কৃত্তিবাস, এখনো তার জন্মদিন পালন করে এলাকাবাসী, কিন্তু চূড়ান্ত অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তার জন্ম ভিটা। লাইব্রেরী আছে কিন্তু বই পড়ার মানুষ নেই। পর্যটকদের জন্য নেই কোনো থাকার ব্যবস্থা। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকার উভয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদীয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। জানা যায় সেখানেই তিনি রামায়ণ রচনা করেছিলেন। একটি বটগাছের তলায় বসেই তিনি তাল পাতার ওপর রামায়ণ কাব্য লিখতেন বলে জানা যায়। তার মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন ধরেই কবি কৃত্তিবাস স্মৃতি রক্ষা বলে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই মূলত কোন রকমের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে কবি কৃত্তিবাস এর জন্ম ভিটা। তার জন্মের সময় নিয়ে বিভিন্ন অভিমত থাকলেও শ্রীপঞ্চমী পূর্ণ মাঘ মাসে তার জন্ম জয়ন্তী উৎসব পালন করা হয়।
প্রতি বছর জন্মজয়ন্তী পালন করলেও চূড়ান্ত অবহেলার মধ্যে দিয়ে রয়েছে কবি কৃত্তিবাস এর স্মৃতি বিজড়িত জন্মভিটা। কবি কৃত্তিবাস এর নামে একটি লাইব্রেরী করা হয়েছে। যেখানে কবি কৃত্তিবাস এর সম্পর্কিত নানান ভাষায় বই রাখা হয়েছে। কিন্তু বই পড়ার মতো কোন পাঠক নেই। শুধু তাই নয় ওই লাইব্রেরীতে নির্দিষ্ট কোনো লাইবেরিয়ার নেই।
সেই কারণেই পর্যটকরা এলে তাদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। শুধু তাই নয় পর্যটকদের জন্য নেই কোনো থাকার ব্যবস্থা। সেই কারণেই পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। হাতে গোনা দুই একজন এলেও তারা দিনের দিন আবার ফিরে যায়। পাশাপাশি কৃত্তিবাসের নিজের হাতে লেখা যে আসল পুঁথি সেটিও জানা যায় ফ্রান্সের কোন অডিটরিয়ামে রয়েছে।
স্মৃতি রক্ষা কমিটিতে নদিয়া জেলা প্রশাসনের পদাধিকার এবং জনপ্রতিনিধিরা থাকলেও কোনো উৎসাহ দেখায় না এটিকে আরো উন্নত করে তোলার। সেই কারণেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের উপর। তারা চাইছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ই মিলিতভাবে আলোচনা করে কবি কৃত্তিবাস এর জন্ম ভিটা এবং তার স্মৃতি বিজড়িত স্থান গুলি যাতে আরও উন্নতি করা যায় এবং পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থা করা যায় তার ব্যবস্থা অতিদ্রুত করুক।
এর পাশাপাশি তারা চাইছে কৃত্তিবাসের আসল পুঁথিটি যাতে ফ্রান্স থেকে নিয়ে এসে তার জন্ম ভিটা অডিটোরিয়ামে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করুক সরকার। যদিও এ বিষয়ে শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দুইদিন আগেই আমি কৃত্তিবাসের আসল পুথিটির বিষয়ে জানতে পেরেছি। এটা তো শুধু বিধায়কের একার কাজ নয় উচ্চতর নেতৃত্ব সঙ্গে কথা বলব যতটা করা সম্ভব চেষ্টা করব ব্যবস্থা করার।