দূরত্ব বাড়ছে বিজেপির সঙ্গে,স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি নিরব মুকুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু জল্পনা

নিউজ ডেস্ক : বর্তমান ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপির অমিত শাহের প্রভাব যেমন ঠিক তেমনই মুকুল রায়ের প্রভাব আছে বঙ্গ রাজনীতিতে। রাজ্যের ৭৭ হাজারের বেশি বুথের নাড়ি নক্ষত্র মুকুলের থেকে ভালো বোঝেন এমন রাজনীতিবিদ বাংলায় কমই আছে।

কিন্তু গত বেশ কয়েকদিন ধরেই মুকুল রায় নীরব। বিধানসভায় শপথ গ্রহণের সময় তাঁকে শেষ মিডিয়ার মুখোমুখি হতে দেখা গিয়েছিল। বলেছিলেন, কখনো কখনো চুপ থাকতে হয় ইচ্ছা করেই। সময় হলেই বলবেন সব কিছু। কি সেই শিব কিছু তা এখনও তাঁর মুখ থেকে শোনা যায়নি। তবে বিজেপির সঙ্গে যে তার দূরত্ব বাড়ছে ক্রমে তা সুস্পষ্ট। সে জন্যই তিনি স্বেচ্ছায় এখন ঘরবন্দি। একেবারে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বঙ্গ রাজনীতির এই চানক্য। তাকে দেখা গেছিল বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নির্বাচনের বৈঠকে। তারপর থেকেই অন্তরালে মুকুল। কিন্তু কেন?

 

সদ্য করোনা মুক্ত হয়েছেন। শরীর এখনও দুর্বল। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, একেবারেই খাওয়া দাওয়া করতে পারছেন না। সঙ্গে উদ্বেগ রয়েছে স্ত্রী’‌কে নিয়েও। গত প্রায় ১৫ দিনেরও বেশি সল্টলেকেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মুকুল পত্নী কৃষ্ণা। কোভিড সেরে গেলেও ফুসফুসের সমস্যা, যা এই মুহূর্তে খানিকটা

গুরুতর।

 

 

 

কিন্তু শুধুই কী শারীরিক ও পারিবারিক কারণ? বাংলার এই ‘‌চাণক্য’‌ নিছক শরীর খারাপ আর মন খারাপের ঘেরাটোপে নিজেকে রাজনীতির থেকে খানিকটা হলেও দূরে সরিয়ে রেখেছেন একথা মানতে নারাজ তাঁর অনুগামীরা। বরং তাদের ক্ষোভ বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ২০১৯ লোকসভা ভোটের জন্য দিল্লি বিজেপি থেকে যে নির্বাচনী কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল, তার মাথায় ছিলেন মুকুল। ৪২ আসনের মধ্যে ১৮ টি আসন পেয়ে ২০২১ ভোটের জন্য নয়া উদ্যমে ঝাঁপিয়েছিল দল। কিন্তু দায়িত্বের অনেকটাই মুকুলের হাত থেকে অন্য হাতে চলে যায়। এমনকি কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে খানিকটা নিমরাজি হয়েই ভোটে দাঁড়ান তিনি। ফল বেরনোর পর রাজনৈতিক মহলের প্রত্যাশা ছিল, অন্তত সিনিয়রিটির বিচারে বিরোধী দলনেতার পদ পাবেন মুকুল। কিন্তু সেটাও হয়নি। সব মিলিয়ে তাই কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধ এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক।

 

আবার মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা একাধিক অনুগামীর বক্তব্য, মুকুলের এই অসুস্থতা পর্বে সল্টলেক এর আশেপাশে থাকা প্রায় কোনও রাজ্য বিজেপির নেতা মুকুলের খোঁজ নেননি। দিল্লি থেকে ফোন এলেও রাজ্য নেতাদের এই ঔদাসীন্য মুকুলকে নাকি কষ্ট দিয়েছে।

 

ফলে আপাতত বঙ্গ রাজনীতিতে মুকুল রায়ের প্রভাব এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা থেকে যে গেরুয়া শিবির অনেকটা বঞ্চিত সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করার সময় ও কিন্তু মুকুল রায় এমন হঠাৎ করে নিরব ছিলেন বেশ কিছুদিন তারপর নিজের রাজনৈতিক রং বদলে ফেলেন। এবারও কি এমন করতে চলেছেন মুকুল বাবু? প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।

Latest articles

Related articles