নিউজ ডেস্ক : সারাদেশে যখন গেরুয়া সন্ত্রাস থাবা বসাচ্ছে এবং গেরুয়া শিবিরের তৎপরতায় সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প করোনা সংক্রমনের থেকেও অনেক দ্রুত বেগে ছড়িয়ে পড়ছে ঠিক সেইসময় এক সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেল হুগলির খানাকুলে। প্রকৃত বাঙালি সংস্কৃতি যে সাম্প্রদায়িকতা সমর্থন করেনা বরং সংহতির পথ প্রদর্শক তা দেখা গেল গতকালের ঘটনায়। খানাকুলের মুসলিম প্রার্থীর জয়ের জন্য যজ্ঞ করতে দেখা গেল এলাকার অসংখ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুসারীর। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুন্সি নজবুল করিমের জয়ের প্রার্থনায় এদিন সকাল থেকেই এক বিরাট মঙ্গল যজ্ঞের আয়োজন করেন ভারতীয় সনাতন ব্রাহ্মণ সমন্বয় ট্রাস্ট-এর এলাকার সদস্যরা। যোগ দেন ১০০ জন ব্রাহ্মণ। যা শুনে আপ্লুত প্রার্থী নজবুল বললেন, ‘এটাই ভারত। এটাই আমাদের আসল সংস্কৃতি।’
এদিন সকাল থেকেই সাজসাজ রব পড়ে যায় খানাকুলের রাজহাটি সিনেমাতলার মাঠে। টাঙানো হয় সামিয়ানা। আসে বিপুল পরিমাণ কাঠ। ধুতি চাদরে শোভিত হয়ে আসেন ব্রাক্ষণরা। যজ্ঞ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকলেরই আজ উপবাস। ট্রাস্টের সম্পাদক সুরজিৎ চক্রবর্তী জানালেন, ‘এক কুইন্টাল কাঠ এনেছি। সম্পূর্ণ নিজেদের খরচায়।’
কেন এই উদ্যোগ? সুরজিৎ বলেন, ‘অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন হিন্দু হয়ে আমরা কেন মুসলিম প্রার্থীকে জেতাতে এত তোড়জোড় করছি। আসল কথা হল নজবুল আমাদের এলাকার ছেলে। সকলেই ওঁকে ভালোবাসি। সেজন্যই ঈশ্বরের কাছে ওঁর জয়ের কামনায় এই যজ্ঞের আয়োজন করেছি’। কিন্তু এলাকার অন্য প্রার্থীরাও তো ঘরের ছেলে। তাঁদের জন্য তো করছেন না! সুরজিৎ বলেন, তৃণমূল সরকার আমাদের পুরোহিতদের ভাতার বন্দোবস্ত করেছে। আমরা এর জন্য উপকৃত। তাই আমরা ঠিক করেছি এই দলের পাশেই থাকব। সেই কারণেই নন্দীগ্রামে আমাদের সমস্ত সদস্যদের কাছে আমরা মমতা ব্যানার্জির পক্ষে যেমন ভোট দিতে বলেছিলাম তেমনি রাজ্যের বাকি জায়গাতেও তৃণমূলকে সমর্থন করতে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের অনুরোধ জানিয়েছি।