মহারাষ্ট্রের প্রখ্যাত শনি শিংগনাপুর মন্দির ট্রাস্ট একযোগে ১৬৭ জন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছে, যাদের মধ্যে ১১৪ জনই মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। শুক্রবারের এক ট্রাস্ট সভায় দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি ও কাজে অবহেলার মতো ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের’ অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে শ্রী শনেশ্বর দেবস্থান ট্রাস্ট। ট্রাস্ট সচিব অপ্পাসাহেব শেতে জোর দিয়ে বলেন, “ভারত গণতন্ত্র, আমরা ধর্মনিরপেক্ষ। বহিষ্কৃতদের কিছু মুসলিম হলেও, নিয়ম ভাঙার কারণেই ব্যবস্থা।”
তবে এই পদক্ষেপের পটভূমিতে সাম্প্রতিক মাসজুড়ে তীব্র চাপ সৃষ্টি করছিলেন ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ও স্থানীয় এনসিপি বিধায়ক সংগ্রাম জগতাপ। গত ২১ মে মন্দিরের পবিত্র চত্বরে মুসলিম কর্মীদের গ্রিল বসাতে দেখে তাদের বিক্ষোভ শুরু হয়। জগতাপ শনিবার এক ‘হিন্দু ধর্ম রক্ষা’ পদযাত্রারও হুমকি দিয়েছিলেন, এই যুক্তি দেখিয়ে যে হিন্দু মন্দিরে মুসলিম কর্মী নিয়োগ ‘যথার্থ নয়’। ট্রাস্ট সভার ঠিক আগের দিনই এই হুমকি ছিল।
ছাঁটাইকর্মীরা কিন্তু একেবারই হতবাক। এক বরখাস্ত কর্মীর কণ্ঠে হতাশা, “একেবারে গরিব মানুষ আমরা। মূল মন্দিরে নয়, ট্রাস্টের গোশালা বা অন্যান্য প্রকল্পে কাজ ছিল। চাকরি গেলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।” প্রায় ২৪০০ কর্মী নিয়ে চলা এই ট্রাস্ট মন্দির ও তার সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করে। শনি শিংগনাপুরের দরজাবিহীন বাড়িঘর ও খোলা আকাশের নিচে শনিদেবের পাথরের মূর্তিই এর বৈশিষ্ট্য, যা লক্ষ্যশালী ভক্ত টানে। ট্রাস্ট প্রেসিডেন্ট ভাগবত বানকারের বক্তব্য, “অনুপস্থিতি ও কাজে অবহেলার কারণেই ১৬৭ জনকে বরখাস্ত করা হলো।” তবে কর্মচ্যুতির সময় ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক চাপের সমাপতন অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।