নিউজ ডেস্ক: মুর্শিদাবাদে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ৬ জন গ্রেফতার হওয়ার পর বাংলাকে সন্ত্রাসের আঁতুরঘর বলে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। রাজ্য হোক বা দিল্লির নেতৃত্ব, নিশানা করে চলেছেন বাংলাকে। পালটা বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশাত্মবোধ বিজেপির থেকে শিখতে হবে না বলেও পালটা সুর চড়িয়েছেন তিনি। এবার সরাসরি এনআইএ-কে কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলল সিপিআই (এমএল)। সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে CPI(ML)-এর রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘কেন্দ্রের শাসকদল ২০২১ সালের নির্বাচনী পরিকল্পনা তৈরি করতে ইতিমধ্যে দিল্লিতে বৈঠকে মিলিত হয়েছে। সেখানেই হচ্ছে সমস্ত পরিকল্পনা।’
প্রেস বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘এই মাসের শুরুতে এ দেশের তথাকথিত এলিট তদন্তকারী সংস্থা NIA-র গতিবিধি ও তৎপরতা সম্পর্কে কিছুটা ওয়াকিবহাল হয়েছিলেন রাজ্যবাসী। সুপরিচিত তরুণ বিজ্ঞানী ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পার্থসারথি রায়কে সমন ধরাতে কল্যাণীতে আইআইএসইআর-এ পোঁছে গিয়েছিল NIA-এর উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা আধিকারিকরা। ভীমা কোঁরেগাও এলগার পরিষদ মামলায় সাক্ষ্যপ্রদানের সমন ধরানোর জন্য। রাজ্যজুড়ে প্রবল প্রতিবাদের মুখে NIA-এর তৎপরতা কিছুটা পিছু হটে।
কিন্তু ফের তাঁদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। কেরল ও বাংলা থেকে ৯ জন তথাকথিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার সদস্য গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায়।’
আলকায়দা সন্দেহে গ্রেফতার বাসিন্দাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এরা সবাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দরিদ্র যুবক। NIA-এর পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলে ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ উচ্চস্বরে এদের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়দার সিক্রেট মডিউলের সদস্য হিসেবে তুলে ধরছে। গল্পের গরু ইতিমধ্যেই গাছে উঠতে শুরু করেছে। আল কায়দার কি মাত্রায় অবনতি হয়েছে যে, প্রায় নিরক্ষর কিছু যুবক এই টেক স্যাভি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সিক্রেট মডিউলের সদস্য হিসেবে কাজ করে!’
সংবাদ মাধ্যমের একাংশকেও কাঠগড়ায় তুলেছে লিবারেশন। তাঁদের প্রেস বিবৃতি অনুযায়ী, ‘মুর্শিদাবাদে এদের বাড়িতে নাকি গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং তারমধ্যে কিছু বোমা, তার ও কিছু ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পাওয়া গেছে। আবার স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিন রিপোর্টে জানাচ্ছেন, সুড়ঙ্গ নয়, ওটা সেফটি ট্যাংক! NIA-এর তরফ থেকে এই সংবাদের কোন পুষ্টিকরণ এখনও পাওয়া যায়নি।’
উল্লেখ্য, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA গত শনিবারই বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং কেরালার এর্নাকুলামে বেশ কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালা-সহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় আল-কায়দার আন্তঃরাজ্য সক্রিয় চক্র গড়ে উঠেছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষদের মারার পরিকল্পনা করছিল এই চক্রটি।’ এদিনই ওই ৬ জনকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছে এনআইএ।
সৌ:এইসময়