নিউজ ডেস্ক : পবিত্র শবে কদরের রাত থেকেই ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা শুরু করেছিল ইসরাইল। মুহুর্মুহু ইসরাইলি বিমানবাহিনীর বিমানগুলোর হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে হাজার রাজপথ। ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে বহু সুউচ্চ ভবন। প্রাণ গিয়েছে বহু ফুলের মত শিশুর। ইসলাম এবং মাতৃভূমির ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে বহু যুবক। ১১ দিন ব্যাপী এই রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনের পর গাজাবাসী এক খুশির পুলক অনুভব করছে। রমজান শেষ হলেও ঈদ তাদের করা হয়নি। তাই রমজান শেষ না যুদ্ধ শেষ করে ঈদ উদযাপন করছে আজ গাজাবাসী। শুক্রবার সকাল থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যখন যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয় তখনই সেখানকার মুসলিমরা ঈদের খুশিতে মেতে উঠে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হামাসের নেতারা বিজয় ভাষণ শুরু করেন ঈদের খুতবা দিয়ে। মঞ্চের সামনের দাড়িয়ে থাকা জনতা ঈদের তাকবীর দিতে শোনা যায়।
গাজা উপত্যকা হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা খলিল আল-হাইয়া তার ভাষনের শুরুতেই তাকবির দেন। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। এরপর সমাবেত লোকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ আমাদের বিজয়ের ঈদ। হে রব, আপনার বহুত শুকরিয়া, আপনি আমাদের শত্রুদের ঠেকিয়ে দিয়েছেন, আমাদের জনগণকে বিজয় দিয়েছেন। জেরুসালেমকে বিজয়ী করেছেন, শেখ জাররাহকে বিজয়ী করেছেন, সকল স্থানের জনগণকে বিজয় দান করেছেন।
তিনি বলেন, হে রব, আপনার বহুত শুকরিয়া, আজকের দুই উপলক্ষের ঈদ আমাদের নসিব করানোর জন্য; রমজানের শেষ হওয়ার এবং জেরুসালেম ও ফিলিস্তিনের সম্মান ও মর্যাদাকর বিজয়ের উপলক্ষ।
ভাষনের এক পর্যায়ে সমাবেত হওয়া জনতা স্লোগান দিতে থাকে ‘তেল আবিব আমাদের থেকে দূরে থাকো।’
১১ দিন যুদ্ধের পর বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা ঘোষণা করে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানায়, সিকিউরিটি ক্যাবিনেট সর্বসম্মতভাবে শর্তহীন একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে মিসরীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে। তবে যুদ্ধ বিরতির ক্ষেত্রে হামাস নেতারা দাবি করেছেন মসজিদে আকসা তে ইসরাইল তাদের আগ্রাসন বন্ধ করবে এবং অবৈধ ভাবে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা বন্ধ করবে। যদিও ইসরাইল এটা স্বীকার করেনি তবে এটা ঠিক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
শুক্রবার ভোর থেকে এই যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়। এই কয়দিনে ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ৬৫ জন। আর ইসরাইলে দুই শিশুসহ নিহত হয়েছে ১২ জন।